সৈকত মাইতি, তমলুক: করোনা (Coronavirus) নিয়ে চতুর্দিক তোলপাড়। কবে তৈরি হবে ভ্যাকসিন, সেই আলোচনা এখন মুখে মুখে। এই পরিস্থিতিতে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ করার টোপ দিয়ে বাংলার এক ব্যবসায়ীর থেকে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্কটিস তরুণীর বিরুদ্ধে। প্রতারিত আশিস সাউ পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার ব্যবসায়ী আশিস সাউ সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ তৎপর। গত ৬ এপ্রিল তাঁর এক তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয়। ওই তরুণী নিজেকে স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা বলেই দাবি করেন। এছাড়াও তিনি জানান আমেরিকার এক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রোকিওরমেন্ট ম্যানেজার পদে চাকরি করেন। পরিচয়ের পর থেকে ঘনঘনই কথাবার্তা হত তাঁদের। তাতেই আশিসবাবু জানতে পারেন, তরুণী যে সংস্থায় কর্মরত, ওই সংস্থা নাকি করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছে। ভারত থেকেই নেওয়া হচ্ছে কাঁচামাল। যারা কাঁচামাল পাঠাচ্ছে, তাদের কমিশন দেওয়া হচ্ছে বলেও ওই তরুণী জানান বলেই দাবি ব্যবসায়ীর।
আশিসবাবুকে ওই কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান তরুণী। সদ্য পরিচিত বান্ধবীর কথায় আর না করতে পারেননি তিনি। রাজি হয়ে যান। কিন্তু কোথা থেকে কাঁচামাল পাওয়া যায়, সে বিষয়ে কিছুই জানা ছিল না আশিসবাবুর। তবে তরুণীই তাঁকে সমস্ত খোঁজখবর দেন। মহারাষ্ট্রের এক সংস্থার ঠিকানা, ফোন নম্বর, ই-মেল আইডি দেন তিনি। আশিসবাবুকে জানানো হয় ৬ জুলাই আমেরিকার ওই সংস্থা বিশেষ বিমানের মাধ্যমে কাঁচামাল সংগ্রহ করবে। সেই অনুযায়ী আশিসবাবু তড়িঘড়ি মহারাষ্ট্রের সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মহারাষ্ট্রের সংস্থার তরফে জানানো হয়, ৪০ শতাংশ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। সেই টাকা দেন পাঁশকুড়ার ব্যবসায়ী। এরপর আরও কিছু টাকা দাবি করা হয়। এভাবে মোট ৫৪ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা দিয়ে ফেলেন তিনি।
অভিযোগ, টাকা খরচ হলেও কাঁচামাল পাননি। ওই সংস্থার ফোন নম্বর, ই-মেল আইডির মাধ্যমে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন আশিসবাবু। তবে কোনও লাভই হয়নি। তাঁর বান্ধবীও বেপাত্তা। এরপর ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন তিনি কোনও প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছেন। এরপর পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তবে এখনও অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.