দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: তান্ত্রিকের ঘর থেকে উদ্ধার হল যুবকের রক্তাক্ত দেহ৷ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানার বেতবেড়িয়ার রামকৃষ্ণ পল্লি গ্রামে৷ নরবলির জন্য খুন নাকি অন্য কিছু, যুবকের রহস্যমৃত্যুতে এমনই নানা প্রশ্নের ভিড়৷ নিহতের পরিচয় এখনও জানা যায়নি৷ এই ঘটনার পর থেকে পলাতক তান্ত্রিক৷ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে ওই যুবকের সঙ্গে আসা এক তরুণীও৷ দুজনের খোঁজে তল্লাশি জারি রেখেছে পুলিশ৷
বেতবেড়িয়ার রামকৃষ্ণ পল্লির বাসিন্দা সত্য হাওলাদার তন্ত্রসাধনা করেই দিন কাটান৷ তাঁর কাছে প্রতিদিনই বহু লোকজন আসেন৷ শুক্রবার সন্ধেয় এক মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে সত্য হাওলাদারের বাড়িতে আসেন ওই যুবক। তারপর ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ প্রতিবেশীদের দাবি, গভীর রাত পর্যন্ত বন্ধই ছিল তান্ত্রিকের ঘরের দরজা৷ দীর্ঘক্ষণ দরজা বন্ধ থাকায় অবাক হয়ে যান তান্ত্রিকের ছেলে সঞ্জয় হাওলাদার৷ বাবার খোঁজ নিতে দরজা ধাক্কাধাক্কি করতে শুরু করেন তিনি৷ বাধ্য হয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন৷ ভিতরে ঢুকে প্রায় অবাক হয়ে যান সঞ্জয়৷ তিনি দেখেন, ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক যুবক৷ তবে বাবাকে দেখতে পাননি তিনি৷
খবর দেওয়া হয় পুলিশে৷ তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বেতবেড়িয়া ক্যাম্পের পুলিশ৷ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে৷ পুলিশসূত্রে খবর, উদ্ধারের সময় দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাওয়া গিয়েছে৷ দেহের পাশ থেকে একটি কুড়ুলও উদ্ধার করা হয়েছে৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই কুড়ুলটি দিয়েই কোপানো হয়েছে যুবককে৷ স্থানীয়দের দাবি, মোক্ষলাভের আশায় নরবলি দিতে গিয়েই মেরে ফেলা হয়েছে ওই যুবককে৷ যদিও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ এদিকে এই ঘটনার পর থেকে পলাতক তান্ত্রিক৷ খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না যুবকের সঙ্গে আসা তরুণীরও৷ দুজনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷
এর আগে অসমেও দিনকয়েক আগে শিক্ষক পরিবারের শিশুকে বলি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়৷ প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর দেওয়া হয় পুলিশে৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছনো মাত্রই তান্ত্রিক এবং শিশুর পরিবারের সদস্যরা পুলিশের উপর হামলা চালায়৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে পালটা বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ৷ তাতে জখম হন দু’জন৷ তবে শেষমেশ শিশুকে উদ্ধার করা হয়৷ এই ঘটনায় শিশুর পরিবারের সদস্য এবং তান্ত্রিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ একবিংশ শতাব্দীতেও নরবলির মতো ঘটনা কীভাবে ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ শিক্ষার অভাবেই কি বারবার শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছে কুসংস্কার, এই প্রশ্ন এখন ভাবাচ্ছে সকলকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.