ফাইল ছবি
ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: জেলা বিজেপির মণ্ডল গঠনকে কেন্দ্র করে অশান্তি অব্যাহত। নতুন মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণার পর দিন কয়েক আগে বারাসতের রাস্তায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের যে ছবি ধরা পড়েছিল, বুধবার তা চরমে পৌঁছল। এদিন বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনেই এক কর্মীকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করল অন্য কর্মীরা। এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার প্রকাশ্যে বিজেপির এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনায় জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে দলেরই একাংশ।
বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গোলমালের ছবি দেখা যাচ্ছে। বাদ যায়নি উত্তর ২৪ পরগনাও। সম্প্রতি বারাসতের হেলাবটতলা মোড়ের কাছে বিজেপির মণ্ডল গঠনের প্রক্রিয়া চলাকালীন রাস্তার উপর হাতাহাতিতে জড়ায় বিজেপি কর্মীরা। কারণ, রাজ্য কমিটির নির্দেশ ছিল, জেলাগুলির মণ্ডল সভপতি নির্বাচন নয়, মনোনয়ন করতে হবে। কিন্তু দলেরই একাংশের সেই নির্দেশ অমান্য করে মণ্ডল সভাপতির নির্বাচনের জন্য ভোট হয় বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলায়। আর তা নিয়েই অশান্তির সূত্রপাত। জেলা বিজেপির এক পক্ষ নতুন মণ্ডল সভাপতিদের মানতে রাজি হননি। তাদের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন রাজকুমার পাল নামে এক বিজেপির কর্মী। সে দিনের পর থেকে জেলা বিজেপির কর্মীদের মধ্যে ভাঙন ধরতে শুরু করে। বিভিন্ন স্টেশন বিজেপির জেলা সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসা ছড়ানো হয়। এসবের মধ্যেও বুধবার যা ঘটল, তা সবকিছুর সীমা ছাড়িয়ে গেল।
এদিন বারাসতের জেলা কার্যালয়ে নতুন মণ্ডল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন জেলা সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়। সে সময় রাজমকুমার পাল নামে এক কর্মী সেখানে যান। জেলা সভাপতির অনুগামীদের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। এরপরই তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রকাশ্য রাস্তায় এহেন ঘটনা ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। নিমেষের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই ভিডিও। তাতে দেখা যায়, বারাসতের হরিতলা মোড়ে জেলা কার্যালয়ের কাছে দশ-বারোজন মিলে রাজকুমার পাল নামে ওই বিজেপি কর্মীরা মাটিতে ফেলে চড়, কিল, লাথি, ঘুসি মারছে। বারাসত থানার পুলিশ খবর পেয়ে এসে ওই বিজেপি কর্মীকে উদ্ধার করে।
জেলা বিজেপির একাংশের অভিযোগ, জেলা সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই এই হামলা হয়েছে। তবে শংকরবাবুর বক্তব্য, “কারা মারল, কাকে মারল, তা জানা নেই। সে সময় আমি দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে ব্যস্ত ছিলাম।” তবে ক্ষোভের সুরে শংকরবাবু জানিয়েছেন, যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও পোস্টারিং করে দলের নামে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে, তা খুবই দুঃখজনক। মণ্ডল সভাপতি মনোনয়নের জন্য কমিটি গঠন করে দিয়েছিল রাজ্য নেতৃত্ব। সেখানে জেলা সভাপতির কোনও ভূমিকাই ছিল না। তবে তাঁর অভিযোগ তৃণমূলের প্রত্যক্ষ মদতে এধরনের ঘটনা ঘটছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.