শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: দাদুর হাত ধরে চার বছরের ছোট্ট শিশু গিয়েছিল হাতি দেখতে। আর সেটাই হল কাল! হাতি দেখতে গিয়ে বনকর্মীদের ছোঁড়া গুলিতে জখম হল শিশু। আহত হয়েছেন তার দাদুও। বর্তমানে ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভরতি দু’জনেই। তবে ডুয়ার্সের (Dooars) ধূপগুড়ির ডাউকিমারির চরচরা বাড়ি গ্রামের ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের ভিড়। কেন আশেপাশে জড়ো হওয়া উৎসুক জনতাকে না সরিয়েই গুলি চালালেন বনকর্মীরা, সেই প্রশ্ন উঠছে। যদিও বনদপ্তরের দাবি, বারবারই স্থানীয়দের বাড়ির ভিতর ঢুকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে তাঁরা হাতি দেখতে এতটাই উৎসুক যে কেউই বাড়ি ঢুকতে রাজি হননি। তাই এই বিপত্তি।
শুক্রবার সকালে ডুয়ার্সের ধূপগুড়ির ডাউকিমারির চরচরা বাড়ি গ্রামে হানা দেয় দলছুট একটি দাঁতাল। হাতির হামলায় জখম হন দু’জন গ্রামবাসী। আহত দুই গ্রামবাসীকে উদ্ধার করে প্রথমে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ এবং নাথুয়া রেঞ্জের বনকর্মীরা। চরচরা বাড়ি গ্রামের একপাশে নাথুয়া, রামশাই। আরেক পাশে রয়েছে সোনাখালির জঙ্গল। বনকর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরি জানান, বনকর্মীরা হাতিটিকে তাড়া করে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা শুরু করে। দুপুরের পর হাতিটি চরচরা বাড়ি গ্রাম থেকে বেরিয়ে ফটকটারি গ্রামে ঢুকে দিগভ্রান্ত হয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। বাধ্য হয়ে হাতি তাড়াতে ছড়রা গুলি চালাতে বাধ্য হন বনকর্মীরা। গুলি ছিটকে জখম হন বছর ষাটের প্রমোদ মোদক এবং চার বছর বয়সি তাঁর নাতনি লক্ষ্মী মোদক। দু’জনকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এরপর হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে জঙ্গলে ফেরানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হয়। তবে সন্ধে নেমে আসায় আর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বনদপ্তর। ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরি জানান, রাতভর গ্রামের একটি পাট খেতের পাশে দাঁড়িয়েছিল হাতিটি। তবে ভোরের দিকে বহু কষ্টে হাতিটিকে জঙ্গলে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.