মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: করোনাকে পরাস্ত করে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় শ্যামপুরের সুদীপ্তা। কিন্তু তাঁকে আনতে যাবে কে? বাড়ির লোকেরা তো কোয়ারেন্টাইনে। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এলেন খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (BMOH)। এক স্বাস্থ্যকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে চেপে শ্যামপুর ১ ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূন ভট্টাচার্য ছুটে গেলেন বারাসতের কোভিড হাসপাতালে। ফিরিয়ে আনলেন করোনা জয়ীকে। তবে আপাতত গাদিয়াড়া কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে ওই তরুণীকে।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, শ্যামপুর ১ নম্বর ব্লকের ধান্দালি গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়নগরের বাসিন্দা সুদীপ্তা দলুইকে ১৮ এপ্রিল একাধিক উপসর্গ নিয়ে ভরতি করা হয় উলুবেড়িয়া হাসপাতালে। ২০ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসতেই জানা যায় তিনি আক্রান্ত। এরপরই বারাসতের হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। সেখানে চিকিৎসা শুরুর পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। ফের নমুনা পরীক্ষা হলে রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। এরপর ২রা মে তাঁকে ছুটি দেওয়ার পরিকল্পনা করে করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানানো হয় শ্যামপুর স্বাস্থ্য দপ্তরে। সমস্যার সূত্রপাত এখানেই। কে আনতে যাবে ওই তরুণীকে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। কারণ, সুদীপ্তার করোনা ধরা পড়ায় তাঁর বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির সকলকে পাঠানো হয়েছে গাদিয়াড়া কোয়রেন্টাইন সেন্টারে। তাঁরা এখনও সেখানেই। এই নিয়ে বিপাকে পড়ে ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর।
শেষমেষ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূন ভট্টাচার্য। তিনি নিজেই সুদীপ্তাকে আনতে যাবেন বলে জানান। হাসপাতালের ম্যালেরিয়া ইন্সপেক্টর প্রদীপ মাল তাঁর সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। শনিবার রাতে বারাসতের উদ্দেশ্য রওনা দেন দু’জন। করোনা জয়ী তরুণীকে নিয়ে গভীর রাতে শ্যামপুরে ফেরেন তাঁরা। প্রসূনবাবু বলেন, “তরুণীকে আপাতত রাখা হয়েছে গাদিয়াড়া কোয়রেন্টাইন সেন্টারে। সকলেই সুস্থ রয়েছেন।” পাশপাশি তিনি বলেন, সকলে ভয় পাচ্ছিল, কিন্তু এখানে আতঙ্কের কোনও ব্যাপার নেই। তা বোঝাতেই আমি নিজেই সুদীপ্তাকে আনতে হাসপাতালে ছুটে যাই। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.