সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: এগরা, বজবজ, দুবরাজপুরের পর এবার ভাঙড়। ফের বিস্ফোরণে কাঁপল এলাকা। বীরভূমের পর এবার ভাঙড়েও তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বিস্ফোরণ। বোমার আঘাতে বাড়ির একাংশ সম্পূর্ণ উড়ে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। এদিকে রাজ্য়জুড়ে বেআইনি বাজির বিকিকিনি ও উৎপাদন বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। সেই মতো জেলায় জেলায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। সূত্রের খবর, দিনভর বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আটক হয়েছে বাজি তৈরির মশলাও। গ্রেপ্তার শতাধিক। এদিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গি ও চম্পাহাটির বাজি বাজার ও যাবতীয় কারখানা দু’মাসের জন্য বন্ধ করা হয়। নিরাপত্তার সব দিক খতিয়ে দেখে ফের চালু করা হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙরের দু’নম্বর ব্লকের চালতা বেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মঙ্গলবার হঠাৎই বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পায় স্থানীয়রা। তৃণমূল কর্মী আরিফুল মোল্লার বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে টালির চাল এবং বারান্দার ছাদ বোমার আঘাতে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। বোমার আঘাতে আশপাশের বাড়িতেও কিছুটা হলেও ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনায় একজন মহিলা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। রোশনারা বিবি নামে ওই মহিলাকে ঘটকপুকুরের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করানো হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে ওই এলাকায় পৌঁছয় কাশিপুর থানার পুলিশ বাহিনী। শুরু হয়েছে তদন্ত। বোমা ঘরের ভেতরে মজুত করা ছিল নাকি বাইরে থেকে ছোড়াও হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শুধু তাই নয় এই বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আইএসএফের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে তৃণমূলের ওই ব্যক্তি বোমা মজুত করেছিলেন এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর জন্য। তবে এ বিষয়ে ভাঙ্গরের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বলেন, “আইএসএফের কর্মীরা বাইরে থেকে বোমা ছোড়ার ফলেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় প্রতিনিয়ত অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে আইএসএফ।” আরাবুলের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে আইএসএফ। আইএসএফ নেতার আইনুল হক বলেন, “এলাকায় অশান্তি পাকানোর জন্যই তারা বোমা মজুত করেছিল কেউ বোমা ছড়েনি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক তাহলে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হবে।”
এদিকে বজবজ বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর আদাজল খেয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মোট ৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের সকলে জামিন পেলেও বেচু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। ডিএসপি (শিল্প) নিরুপম ঘোষ জানান, বেচু মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারণ যে ঘাঁটিবাড়িতে বিস্ফোরণ হয় সেই বাড়িতে মজুত রাখা বাজির অধিকাংশই ছিল বেচু মণ্ডলের। এ পর্যন্ত বজবজ ও মহেশতলার বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ৯০ হাজার কেজি বেআইনি বাজি উদ্ধার হয়েছে।
কলকাতায় বেআইনিভাবে বাজি মজুত করার ব্যাপারে সতর্ক লালবাজার। কলকাতা পুলিশের তরফে শহরের বেআইনি বাজি কারখানা ও গোডাউনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের পক্ষে প্রত্যেক থানার ওসিকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলে হয়েছে, তাঁদের নিজেদের এলাকার সমস্ত অবৈধ বাজি কারখানা, গোডাউন ও দোকান চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। তাদের বিরুদ্ধে আগে ও এখন কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং বাজেয়াপ্ত বাজির ব্যাপারেও লালবাজারকে রিপোর্ট দিতে হবে। লালবাজারের নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে তল্লাশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.