ছবি: প্রতীকী।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লক্ষ্মীপুজোর বিসর্জনের দিন আতশবাজির প্রদর্শন হয়। সেই আতশবাজির প্রদর্শন দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রর। মঙ্গলবার রাতে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার আসানপুর গ্রামে। উৎসব শেষে এমন ঘটনায় গ্রামজুড়ে শোকের পরিবেশ। মৃতের নাম শিবম ঘোষ (৯)। গ্রামের স্কুলেরই ছাত্র ছিল সে।
গ্রামে গত ৩৮ বছর ধরে আসানপুর গ্রামে ধূমধাম করে লক্ষ্মীপুজো হয়। এবারও হয়। আর প্রতিবার প্রতিমা বিসর্জনের দিন গ্রামে আতশবাজির প্রদর্শনী করা হয়। সেই আতশবাজির প্রদর্শনী দেখতে গ্রামের প্রায় সকলেই হাজির থাকেন। মঙ্গলবার রাতে গ্রামের প্রতিমা বিসর্জনের আগে আতশবাজির প্রদর্শনী হচ্ছিল। কৃত্রিম কদমগাছ তৈরি করা হয়েছিল। তাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। কিছু পরে ওই কৃত্রিম কদম গাছের উপরের দিকে থাকা একটি চড়কি ঘোরা বন্ধ হয়ে যায়। তারপরই আতশবাজি ছিটকে এসে লাগে শিবমের মাথায়। গভীর ক্ষত হয়ে যায়। রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তাকে প্রথমে মন্তেশ্বর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে বর্ধমানে রেফার করা হয়। রাতে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির কিছু পরেই শিবমের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে।
বুধবার বর্ধমান মেডিক্যালে ময়নাতদন্তের সময় হাজির ছিলেন মৃতের দাদু পরিমল ঘোষ। তিনি বলেন, “আচমকা ছিটকে এসে আতশবাজি যেন বুলেটের মত ঢুকে যায় শিবমের মাথায়। খুব রক্ত বেরিয়েছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারলাম না।” শিবমের বাবা সুব্রত ঘোষ কথা বলার মত পরিস্থিতিতে ছিলেন না। গ্রামের বাসিন্দা লালুপ্রসাদ ঘোষ বলেন, “এবার নিয়ে ৩৮ বছরে পুজো পড়েছে। কোনওবার এমন দুর্ঘটনা ঘটেনি। কদম গাছ থেকে আতশবাজি ছিটকে গিয়ে শিবমের মাথায় লাগে। আমরা সকলে দৌড়ে গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো গেল না।”
এদিন ময়নাতদন্তের পর গ্রামে দেহ পৌঁছতেই কান্নার রোল ওঠে। পুরো গ্রাম ভিড় করে শিবমদের বাড়িতে। সংলগ্ন সাহাপুর গ্রাম থেকেও বহু মানুষ ছুটে গিয়েছিলেন। সকলেই আক্ষেপ করছিলেন, পুজোর আনন্দটা আর কোনওদিন তাঁরা করতে পারবেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.