টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ‘টাকা মাটি মাটি টাকা’৷ ভিন্ন অর্থে ঠাকুর রামকৃষ্ণের এই অমোঘ উক্তি একেবারে যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল বাঁকুড়ার ছাতনা থানার ভল্টে৷ অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের জন্য ভল্টে রাখা টাকা উইপোকার ‘কল্যাণে’ ঢিবিতে পরিণত হয়ে গেল৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই জেলা থেকে রাজ্যের অর্থ দফতর পর্যন্ত তোলপাড় শুরু হয়েছে৷ ঘটনাটি জানানো হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও৷
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষে অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের জন্য ছাতনা ব্লককে ছ’লক্ষ টাকা দেওয়া হয়৷ কিন্ত্ত সেই টাকা খরচ না হওয়ায় তা ছাতনা থানার ভল্টে রেখে দেওয়া হয়৷ ইতিমধ্যে ২০১৩-১৪ আর্থিক বর্ষের জন্য তিন লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয়৷ সে টাকাও চলে যায় থানার ভল্টে৷ অক্টোবর মাসে থানার ভল্ট খুলে টাকা বের করতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে উইপোকার ঢিবি তৈরি হয়েছে৷ টাকা কেটে সাফ করেছে উইয়ের দল৷ তবে এতদিন বিষয়টি প্রশাসনের তরফ থেকে চেপে রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিলের জেরে ঘটনাটি প্রকাশ্যে চলে আসে৷
ছাতনা ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের কোষাধ্যক্ষ স্বপন গোস্বামী বলেন, “জুলাই মাসে অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের বেশ কিছু টাকা ছাতনা থানার ভল্টে রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু অক্টোবর মাসে ভল্ট থেকে টাকা বের করতে গিয়ে দেখা যায়, টাকা মাটিতে পরিণত হয়েছে৷ ভল্টে উইপোকার ঢিবি তৈরি হয়েছে৷” ঘটনাটি স্বীকার করে জেলা অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের আধিকারিক অমিতাভ পাত্র বলেন, “টাকা বদলে দেওয়ার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করা হয়েছে৷” যদিও ছাতনার বিডিও মলয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না৷ ভল্টের চাবি থাকে অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের ছাতনা ব্লকের সিডিপিও ও কোষাধ্যক্ষের কাছে৷” অবশ্য জেলাশাসক মৌমিতা বসু গোদারা এ প্রসঙ্গে বলেন, “বিষয়টি অর্থ দফতর ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে জানানো হয়েছে৷ দেখা যাক কী হয়৷”
জেলায় বহু অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্প চলছে খোলা আকাশের নিচে বা গাছতলায়৷ সেখানে শিশুদের উন্নয়নে এতগুলো টাকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে৷ উইপোকায় খেয়ে যাওয়া সব টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না, তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.