পুরুলিয়ার ৮৭ বুথে চ্যালেঞ্জে ভোটকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: না আছে ইন্টারনেট। না আছে টাওয়ার। মোবাইল শ্যাডো জোনের আওতায় থাকা পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের চাটুহাসা গ্রাম পঞ্চায়েতের একদা মাও উপদ্রুত ধানচাটানি গ্রামের খুরুজারা ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকবে আরটিসেটের ভরসায়। সুষ্ঠুভাবে ভোট করাতে প্রশাসন তথা কমিশনের কাছে এই প্রথম এই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতাটাই চ্যালেঞ্জ। তবে এই খুরুজারা-সহ জেলার মোট ৮৭টা ভোটগ্রহণ কেন্দ্র মোবাইলে শ্যাডো জোনের আওতায় রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলির সবকটিতেই থাকছে আরটিসেট।
ভোটারদের ঠিকানার দু’কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে হবে বুথ। এই নয়া বিধিতে এবারই ওই খুরুজারা স্কুল বুথ হচ্ছে। আর তাই পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের সেক্টর অফিস থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় একদা মাও উপদ্রুত ধানচাটানি গ্রামে ধারাবাহিক ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এরিয়া ডমিনেশন চলছে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ওই বুথে আরটিসেটের ব্যবস্থা থাকবে।
এই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে আসতে হলে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার মতো ২ দিন আগে থেকেই ভোট কর্মীদের রওনা হতে হবে তেমন নয়। কিন্তু পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা এই বুথে যাওয়ার ঝক্কি কম নয়। দুর্গম না হলেও পাহাড়ি পথ ভাঙলে তবেই পৌঁছানো যাবে ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে।
সিরকাবাদ থেকে ছাতনি হয়ে প্রায় সাত কিমি পাকদন্ডী পথে অযোধ্যা হিলটপ। তার পরে বাঘমুন্ডি ব্লকের অযোধ্যা পাহাড়ের পুনিয়াশশান, উসুলডুঙরির জঙ্গল পেরিয়ে বাঁ দিকে ধানচাটানি গ্রাম। অযোধ্যা হিলটপ থেকে একেবারে ঘন জঙ্গল আর পাহাড়ে আগের মত পায়ে পায়ে মাও আতঙ্ক না থাকলেও গজরাজ আতঙ্ক পিছু ছাড়বে না ভোটকর্মীদের। আড়শার বিডিও গোপাল সরকার জানান, “ধানচাটানির খুরুজারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবারই প্রথম বুথ হচ্ছে। সিরকাবাদ ব্লক কার্যালয় থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে।”
মাও হিংসা আজ অতীত হলেও ধানচাটানি গ্রামে পা রাখলেই গা ছমছম করে আজও। তাই ভোটের ২ মাস আগে থেকেই আড়শা থানার পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে এই এলাকায় ‘কনফিডেন্স বিল্ড আপ’ চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে এই প্রথম ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভাবে ভোট করা যায়। আগে এই ধানচাটানি গ্রামের মানুষজন পাহাড় থেকে নেমে এসে রাজপুতিতে ভোট দিতেন। কিন্তু এবার একদা মাও উপদ্রুত ধানচাটানি তাদের গ্রামেই খরুজারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেবে। ১২০/২৩৯ এই ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৯০। পুরুষ ১৪০, মহিলা ১৫০।
আড়শা বা সিরকাবাদ ব্লক থেকে নালাকোচা দিয়ে ধানচাটানি আসা সহজ। কিন্তু এখনও ওই রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। তাই অযোধ্যা হিলটপ বা আড়শা সেক্টরের কাছে অনেকটা ঘোরা পথে বলরামপুরের এদেলবেড়া দিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু পুরুলিয়া সদর ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার থেকে আড়শার সিরকাবাদ, অযোধ্যা হিলটপ, উসুলডুঙরির মতো গ্রাম দিয়েই যেতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.