ছবি: প্রতীকী
মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: মুক্তিরচক গণধর্ষণ (Gangrape) মামলায় দোষী সাব্যস্ত ৮ জনকে সশ্রম কারাদণ্ডের (Imprisonment) নির্দেশ দিল আমতা আদালত। বৃহস্পতিবারই বিচারক রোহন সিনহা অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ না থাকায় তাদের নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছিল। শনিবার দোষীদের ২০ সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ঘটনা ৯ বছর আগেকার। ২০১৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আমতার (Amta) মুক্তিরচক গ্রামে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। ওই রাতে এক গৃহবধূ তাঁর জা, শ্বাশুড়িকে গণধর্ষণ করে এই ৮ জন। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৯ (অবৈধ জমায়েত), ৩২৩ (শারিরীক নিগ্রহ, মারধর), ৪৫০ (বেআইনিভাবে প্রবেশ) ও ৩৭৬ ডি (গণধর্ষণ) এসব ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। দোষীরা হল বরুণ মাখাল, বংশী গায়েন, নব গায়েন, সৈকত মণ্ডল, সুকান্ত পাত্র, গৌতম মাখাল, গৌরহরি মাখাল ও শংকর মাখাল। আর নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে জগৎ মণ্ডল ও রঞ্জিত মণ্ডলকে।
এই ঘটনায় মোট ৪৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। গণধর্ষণের ঘটনার ৮৭ দিনে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। এদিকে ঘটনার পরপরই ধর্ষিতাদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ধীরে ধীরে আমতা থানার পুলিশ সকলকেই গ্রেপ্তার করে। এরপর ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে আমতা আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মাঝে দোষীরা হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছিল। তবে এলাকায় ঢোকা তাদের নিষিদ্ধ ছিল। তাছাড়া নির্যাতিতাদের যথাযথ নিরাপত্তার জন্য মুক্তিরচক গ্রামে পুলিশের ক্যাম্প করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, এই মুক্তিরচক গণধর্ষণ মামলা রাজ্যে সাড়া জাগানো ঘটনার মধ্যে অন্যতম। অভিযোগ, রাতে এলাকা অন্ধকার করে রাখার জন্য এলাকার আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর নির্যাতিতাদের বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূ ও তাঁর শাশুড়িকে গণধর্ষণ করে। এলাকার লোকেরা আওয়াজ পেলেও ভয়ে কেউ বের হয়নি। গৃহবধূর জেঠিশাশুড়ি কোনওরকমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় অন্ধকারে একলা ছুটতে থাকেন পুলিশের কাছে যাওয়ার জন্য। পথমধ্যে টহলরত পুলিশকে দেখতে পান। তাঁদেরকে ঘটনা কথা বলেন। তারপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর দু’জনকে ভরতি করায় উলুবেড়িয়া তৎকালীন মহাকুমা হাসপাতালে। রাজ্যজুড়ে সাড়া পড়ে যায় এই ঘটনায়। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে তৎকালীন আমতার সিআই (CI)শুভাশিস চক্রবর্তীকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.