সৌরভ মাজি,বর্ধমান: এক যুবকের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হলেন বৃদ্ধা। ‘মা’ বলে সম্বোধন করে খাবার দেওয়ার নামে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালানো হয় তাঁর উপর। যুবকের বিকৃত যৌন লালসার শিকার হয়ে মরণাপন্ন হয়ে উঠেছেন বৃদ্ধা।এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমানে।
বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধা হুগলি জেলার বাসিন্দা। ভিক্ষে করে পেট ভরান। বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতেই থাকেন তিনি। এদিন বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভিতরে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন। পরনের শাড়ির নীচের অংশ রক্তে ভরে গিয়েছে। মেঝেতেও রক্ত লেগে দাগ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিশ অফিসার ও কয়েকজন সাংবাদিক বৃদ্ধাকে পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখে এগিয়ে যান। তাঁরা গিয়ে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের বলার পর বৃদ্ধার চিকিৎসা শুরু হয়। জরুরি বিভাগে চিকিৎসার পর ওই বৃদ্ধাকে গাইনোকোলজি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাঁর যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত দেখে চিকিৎসকদের অনুমান, যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। বৃদ্ধাকে অজ্ঞান করে বেশ কয়েকটি সেলাইও করতে হয়েছে যৌনাঙ্গে।
চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর বৃদ্ধা পুরো ঘটনা জানান। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বাইরে পার্সেল অফিসের কাছে শুয়েছিলেন। বৃদ্ধা বলেন, সেই সময় এক যুবক এসে তাঁকে খাবার দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাঁর উপর নির্যাতন চালায় । কাঁদতে কাঁদতে ওই বৃদ্ধা এদিন বলেন, “আমি চিৎকার করতে গেলে আমার মুখটা হাত দিয়ে চেপে ধরছিল। এই কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না।” অভিযোগ, মুখ চেপে তাঁকে ধর্ষণ করে ওই দুষ্কৃতী। তিনি জানান, জ্ঞান ফিরলে কোনওক্রমে তিনি সেখান চলে আসেন। তারপর কয়েকজন তাঁকে নিয়ে এসে জরুরি বিভাগের ভিতরে ফেলে চলে যায়। ভরতি করায়নি তারা। বৃদ্ধার শাড়ি তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। জরুরির বিভাগের ভিতরে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকা নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা জানান, বৃদ্ধার যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত হয়েছিল। তা মেরামত করা হয়েছে। প্রচুর রক্তপাতের কারণে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তাঁর চিকিৎসা চলছে। একইসঙ্গে ওই বৃদ্ধার বার্ধক্যজনিত কারণেও কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তারও চিকিৎসা চলছে। বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, মেডিক্যাল রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত বলা সম্ভব নয় ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা। তবে ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.