সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বেকার যুবক-যুবতীদের প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ষাট লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ। অভিযুক্ত মহিলা আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করল সুন্দরবন পুলিশ জেলার গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার পুলিশ। এই প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত মহিলাকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
কাকদ্বীপের (Kakdwip) এসডিপিও অনিল কুমার রায় জানান, পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার দক্ষিণ সুরেন্দ্রগঞ্জের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বলেন, ২০১৩-‘১৫ সালের মধ্যে পাথরপ্রতিমা উত্তর সীতারামপুরের বাসিন্দা আশিস মান্না অভিযোগকারীর স্ত্রী ও সন্তানকে প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১১ লক্ষ টাকা নেয়। তাঁদের নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে নির্দিষ্ট স্কুলে গেলে তাঁরা জানতে পারেন ওই দু’টি নিয়োগপত্রই নকল। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে গ্রেপ্তার করে আশিসকে। সে তার অপরাধের কথা পুলিশের কাছে স্বীকারও করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ প্রতারণা চক্রের এক মহিলা, কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা ৩২ বছরের রিয়াঙ্কা চক্রবর্তীর সন্ধান পায়। কিন্তু আগে থেকে বুঝতে পেরে ওই মহিলা পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন আত্মগোপন করে থাকার পর অবশেষে পুলিশ রিয়াঙ্কাকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হল।
কাকদ্বীপ এসিজেএম আদালতে তোলা হলে রিয়াঙ্কাকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, ওই মহিলা ও তাঁর সঙ্গী আরও অনেক বেকার যুবক যুবতীদের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করেছেন। এখনও পর্যন্ত জানতে পারা গিয়েছে, ধৃতরা এভাবে বছরের পর বছর প্রতারণা চালিয়ে ৬০ লক্ষ টাকা বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত রিয়াঙ্কা নিজেকে আইনজীবী বলে দাবি করেছেন। আইন পাশ করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। ধৃত রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে প্রতারণা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির ছয়টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.