দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ কুমারী মায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের (Canning) তালদিতে। অভিযোগ, এক কোয়াক ডাক্তারও জড়িত ছিলেন এই ঘটনায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ক্যানিং থানার তালদি এলাকায় কাজ করেন কোয়াক ডাক্তার রমেন নস্কর। সহযোগী হিসেবে তাঁর সঙ্গে কাজ করেন স্ত্রী নীলিমা নস্কর। অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে প্রসূতি মায়েদের ডেলিভারিও করাতেন তিনি। বুধবার এক কুমারী মহিলা গর্ভবতী অবস্থায় ওই চিকিৎসকের কাছে যান। সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রসব করেন তিনি। জানা গিয়েছে, যেহেতু কুমারী, তাই প্রসবের পর সন্তানকে নিতে অস্বীকার করেন তরুণী। উলটে সন্তানকে বিক্রি করেন। আর এই ঘটনায় জড়িত রমেন নস্কর, স্ত্রী নীলিমা নস্কর-সহ অনেকে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শিশুটির মা, রমেন ও নিলীমা নস্কর-সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে শিশুটিকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় মহিলা সমিতির সম্পাদিকা বর্ণালী নাইয়া বলেন, “মোটা টাকার বিনিময়েই বাচ্চাকে বিক্রি করা হয়েছে। এর আগেও কয়েকটি বাচ্চাকে বিক্রি করা হয়েছে। আমরা খবর পেয়েই পুলিশকে জানাই। তবে কত টাকায় বিক্রি হয়েছে বলতে পারব না।” তবে টাকা নিয়ে বাচ্চা বিক্রির কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কোয়াক ডাক্তারের পুত্রবধূ রিয়া নস্কর। তিনি বলেন, “আমার শ্বশুরের কাছে চিকিৎসা করাতে এসে হঠাৎ এই মহিলা অসুস্থ করে এবং বাচ্চা প্রসব হয়। তারপর তাঁরা সেই বাচ্চা নিতে চায়নি।”
এ বিষয়ে ক্যানিং পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্যের কর্মাধ্যক্ষ অসীমা নস্কর বলেন, “সরকার কন্যা সন্তানদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে তারপরেও কন্যা সন্তানদের কেন অন্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে? যদি টাকা নিয়ে বিক্রি করা হয়, সেটা আরও বড় অন্যায়। বিষয়টি কী তা পুলিশকে খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, কত টাকার বিনিময়ে বাচ্চা বিক্রি করা হয়েছে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই কোয়াক ডাক্তার এমনভাবে কত শিশু বিক্রি করেছেন, কোথায় কোথায় বিক্রি করেছেন এবং ঘটনায় আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়টিও জানার চেষ্টা করছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.