দিব্যেন্দু মজুমদার, চন্দননগর: ফের পচা মাংসের জাল ছড়াচ্ছে রাজ্যে? বৃহস্পতিবার রাতে হুগলির (Hooghly) চুঁচুড়া (Chinsurah) থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫৬ কেজি পচা মাংস। ঘটনায় ইতিমধ্যে এক ব্যবসায়ীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। আর এই ঘটনাই ফের উসকে দিল ভাগার কাণ্ডের স্মৃতি।
জানা গিয়েছে, এদিন রাতে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত এনফোর্সমেন্ট শাখার আধিকারিকরা এবং ফুড সেফটি অফিসার চুঁচুড়ার খরুয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালান। তখনই একটি মাংসের দোকান থেকে ৫৬ কেজি পচা মাংস উদ্ধার হয়। ওই দোকান থেকেই এলাকার একাধিক হোটেল, রেস্তরাঁয় মাংস যেত। কিন্তু আধিকারিকরা দেখেন দোকানে রয়েছে পচা মাংস। এরপরই দোকানের ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তাঁর পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
এই প্রসঙ্গে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি অর্ণব ঘোষ জানান, “মাংসগুলি কতদিনের পুরনো তা জানতে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলেই পুরো চিত্রটা পরিস্কার হবে।” এর পাশাপাশি তিনি জানান, ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর কারা কারা এই চক্রে যুক্ত রয়েছে, কোথা থেকে ওই মাংস এসেছে, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ভাগাড়ের পচা মাংস বিক্রি নিয়ে উত্তাল হয়েছিল কলকাতা ও তার সংলগ্ন শহরতলির অধিকাংশ এলাকা। প্রথমে জানা গিয়েছিল, বজবজের একটি ভাগাড় থেকে মরা পশুর মাংস পাচার হত শহরের হোটেলগুলিতে। সস্তার খাবারে যে মাংস দেওয়া হত তা আসত ভাগাড় থেকেই। মরা পশুর মাংস পাচারের সঙ্গে যুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই চক্রের মূল পান্ডা সানির হদিশ মেলে। এরপরই জানা যায়, শুধু বজবজ নয়, ভাগাড় কাণ্ড ছড়িয়েছে আরও বিস্তীর্ণ এলাকায়। ট্যাংরা, কাঁকিনাড়া, জগদ্দল-সহ একাধিক জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। খোঁজ মেলে হিন্দুস্তান কোল্ড স্টোরের। হিমঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে জমা রাখা হত টন টন মাংস। প্রথমে মরা মশুর মাংসকে বিভিন্ন রাসায়নিকের সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করা হত। পরে তা প্যাকেটজাত করে রাখা হত হিমঘরেই। দেখে মনে হত একেবারে আসল টাটকা মাংসের মতোই। এই মাংসই চালান হত সস্তার হোটেলে। তবে শুধু তাই নয়, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, চক্র ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরেও। এরপর রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে ভাগাড়ের পচা মাংসের হদিশ মেলে। নাম জড়ায় নামী রেস্তরাঁরও। চুঁচুড়ার এই পচা মাংস উদ্ধারের ঘটনা ফের ওই ঘটনারই স্মৃতি উসকে দিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.