আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের জেরে কার্যত জতুগৃহে পরিণত হয়েছে ঘোলার প্লাস্টিক চেয়ার তৈরির কারখানা৷ অনেকেই দাবি করেছিলেন, ফরেনসিক টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহের সময়ই দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে৷ বুধবার নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকদের নিয়ে রটা গুজব ওড়াল দমকল৷ তাদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে প্রায় বাহাত্তর ঘণ্টা কেটে গেলেও, এখনও খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ শ্রমিকদের৷ এদিকে, কারখানা মালিক এবং ম্যানেজার এখনও বেপাত্তা৷ তাদের বিরুদ্ধে নিউ বারাকপুর থানায় দু’টি পৃথক মামলা রুজু করেছে দমকল এবং নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিজনেরা৷
অন্যান্য দিনের মতো সোমবারও ঘোলার প্লাস্টিক চেয়ার তৈরির কারখানায় মোট ৬৯জন শ্রমিক কাজ করছিলেন৷ বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ আচমকাই ওই কারখানায় ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয়রা৷ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা৷ তড়িঘড়ি কারখানা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা৷ মুহূর্তের মধ্যে গোটা কারখানা দখল করে নেয় আগুনের লেলিহান শিখা৷ একে একে দমকলের ৩৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়৷ দমকলকর্মীদের তৎপরতায় প্রায় ৪৮ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে৷ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু৷ প্রাথমিক তদন্তে দমকলকর্মীদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই কারখানা এভাবে জতুগৃহে পরিণত হয়েছে৷ এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন কারখানার পাঁচজন শ্রমিক৷ তাঁরা হলেন, পল্টু দোয়ারি, সুবোধ রায়, নিত্যানন্দ রায়, মুন্না প্রসাদ এবং সঞ্জীব পারিয়া৷ নিখোঁজদের মধ্যে কেউ কেউ বারো বছর, আবার কেউ কেউ তারও বেশি সময় ধরে এই কারখানায় কাজ করতেন৷ শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, ওইদিন পাঁচজনই কারখানায় কাজে গিয়েছিলেন৷ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে আর তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেননি৷ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতারও অভিযোগ তুলেছে নিখোঁজদের পরিবার৷ ধ্বংসস্তূপের ভিতরেই ওই শ্রমিকদের খোঁজে তল্লাশি চলছে৷
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর খেকেই বেপাত্তা কারখানার মালিক এবং ম্যানেজার৷ দু’জনের বিরুদ্ধে নিউ বারাকপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ একটি অভিযোগ দায়ের করেছে দমকল এবং অপর অভিযোগ দায়ের হয়েছে নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবারের তরফে৷ মালিক এবং ম্যানেজারের খোঁজে তল্লাশি চলছে৷ তবে এখনও কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.