উত্তরে জলবন্দি কয়েক লক্ষ। নিজস্ব চিত্র।
স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: অথৈ জল। বন্দি কয়েক লক্ষ মানুষ। পাহাড়ি রাস্তা, পর্যটকদের অতি পরিচিত, প্রিয় বাঘপুলের মতো সেতুতেও কোমর জলে আটকে গাড়ি। জলের তোড়ে একের পর এক বাড়ি ধসে পড়ছে। জাতীয় সড়ক বিপন্ন। দুর্যোগে মৃত ৫। পাহাড়ি তিন জেলা দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং শুধু নয়, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারেও লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। ফুলেফেঁপে ওঠা পাহাড়ি নদীর জলে আরও কত অঘটন ঘটে তার আশঙ্কায় শঙ্কিত সকলেই।
ভরা নদী ও পুকুরে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। তাদের মধ্যে তিনজন জলপাইগুড়ির। বাকি দুজন শিলিগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম শুভজিৎ বিশ্বাস (১১), ঋত্বিক বিশ্বাস (৮), অগ্নু কুমার (৩০), শ্রীবাস দাস (৪০) এবং বিদ্যুৎ সরকার (২৫)। শুভজিৎ ও ঋত্বিক সম্পর্কে ভাই। স্কুল থেকে ফেরার পথে খেলতে গিয়ে জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ির কাছে উত্তাল যমুনা নদীতে ভেসে যায়। শিলিগুড়ির যুবক বিদ্যুৎ বন্ধুদের সঙ্গে ভরা মহানন্দায় স্নান করতে নেমে ভেসে যান। আলিপুরদুয়ারের পূর্ব চৌকিরবস এলাকার শ্রীবাস এবং ময়নাগুড়ির কালামাটির অগ্নু কুমারের দেহ জলাশয় থেকে উদ্ধার হয়েছে।
এদিকে প্রবল বর্ষণের জেরে ভূমিধসে অবরুদ্ধ হয়েছে পাহাড়ের বিভিন্ন রাস্তা। ধস নেমে মিরিক বাইপাস রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। জোড়বাংলো থেকে তিস্তা রোডে ৩ মাইল থেকে ৬ মাইলের মধ্যে ভূমিধস নেমেছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ আছে। তিস্তা থেকে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে কালিম্পং এবং পানবু সড়কেও। এদিকে বাঁধ ভেঙে লিস নদীর জল প্লাবিত করেছে বাগরাকোটের বিস্তীর্ণ এলাকা।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টায় পাহাড়-সমতলে ভারী থেকে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরের পাঁচ জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে হড়পা বান ও ভূমিধসের বিপদ দেখা দিতে পারে।” পরিস্থিতির কবে উন্নতি হবে, তা বুঝতে পারছে না কেউই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.