সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবার ও মথুরাপুরের দুই করোনা (Corona Virus) আক্রান্তের পরিবার-সহ তাঁদের সংস্পর্শে আসা মোট ৪২ জনকে আগেই চিহ্নিত করেছিল প্রশাসন। তাঁদের লালারসের নমুনা পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। রিপোর্ট আসতেই মিলল স্বস্তি। প্রশাসন সূত্রের খবর, ৪১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের কোনও অস্বিত্ব পাওয়া যায়নি। বাকি একজনের রিপোর্ট এখনও মেলেনি।
সোমবার জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নুরপুরের মুকুন্দপুর গ্রামে এক ব্যক্তির শরীরে কয়েকদিন আগেই করোনার সন্ধান মেলে। তাঁর পরিবারের সদস্য ও সংস্পর্শে আসা ৩৩ জনকে দু’দফায় কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। প্রথমে ১৫ জন ও পরে আরও ১৮ জনকে চিহ্নিত করে প্রত্যেকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ৩২ জনেরই শরীরে করোনার কোনও সন্ধান মেলেনি। এখনও এক ব্যক্তির নমুনার রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন যে, মথুরাপুরের বাপুলির চকে যে বৃদ্ধের শরীরে করোনার সন্ধান মিলেছিল ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ৯ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। প্রত্যেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এছাড়াও ডায়মন্ডহারবার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে করোনার প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভরতি থাকা অন্য আরও ২৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ২৮ জনের রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। একজনের রিপোর্ট এখনও আসেনি। ওই আধিকারিক বলেন, “এটা নি:সন্দেহে মন ভালে করা খবর।” একইভাবে স্বস্তি প্রকাশ করে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা বলেন, “এমন একটা স্বস্তির খবর আমিও শুনেছি। তবে এখনও অনেকটা সময় বাকি। করোনার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই চালাচ্ছি। সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও।”
করোনা সংক্রমণ রুখতে সোমবার থেকে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা ও পুর প্রশাসনের কর্তারা আরও বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নিয়েছেন। জানা গিয়েছে, ডায়মন্ডহারবার শহরের রেলগুমটির কাছে বসা মাছ বাজারকে দু’টি ভাগে ভেঙে একটি অংশকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে। সবজি বাজারের একটি অংশ আগেই আলাদা করে বসানো হয় জাতীয় সড়কের ওপর। শহরের মূল বাজারটিতেও চারজন করে মাছ বিক্রেতাকে রোটেশন ভিত্তিতে বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সকাল ৫ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত পাইকারি ব্যবসায়ীরা মালপত্র খুচরো বিক্রেতাদের কাছে ডেলিভারি দিতে পারবেন। আগেরদিন রাতে তার জন্য হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে দোকানদারদের তাঁদের প্রয়োজনমত অর্ডার দিতে হবে। সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য খোলা থাকবে দোকানপাট ও বাজার। সমস্ত দোকানদার এবং মাছ ও সবজি বিক্রেতাদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চলছে মাস্ক বিলির কাজও।
শহরের বুকে তিনটি নাকা পয়েন্ট করা হয়েছে। অপ্রয়োজনে শহরের রাস্তায় ঘোরাফেরা করার অপরাধে কুড়ি জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নামানো হয়েছে রাপিড অ্যাকশন ফোর্সকেও। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হলেই আইনভঙ্গকারীদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.