সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়,দুর্গাপুর: দলমার দাঁতালদের ‘অনুপ্রবেশ’ ঠেকাতে এবার বর্ধমানে ওয়াচ টাওয়ার বসাচ্ছে বনদপ্তর। হাতির দল যে পথে বর্ধমান জেলায় প্রবেশ করেই, সেখানেই বসছে এই টাওয়ার। দাঁতালদের গতিবিধির উপর নজরদারি ছাড়াও সাধারণ মানুষও এই টাওয়ারে উঠে উপভোগ করতে পারবেন গহন জঙ্গলের সৌন্দর্য। আগামী নভেম্বর মাস থেকেই ওয়াচ টাওয়ার চালু হয়ে যাবে বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর।
প্রতি বছর ঝাড়খণ্ডের দলমা পাহাড় থেকে খাবারের খোঁজে দাঁতালের দল হানা দেয় পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন লোকালয়ে। মেদিনীপুর,বাঁকুড়া হয়ে দামোদর পেরিয়ে তারা ঢুকে পড়ে এই দুই জেলায়। হাতির দলের দাপাদাপিতে যেমন ক্ষতি হয় বিঘার পর
বিঘা শস্যের, তেমনই জনজীবনে তারা একরাশ আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। ফি বছরই এই দাঁতালদের হামলায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন মানুষজন। বহু হাতির মৃত্যুও হয়। এবার এই ‘অনুপ্রবেশে’ রাশ টানতেই বনদপ্তরের বর্ধমান বিভাগ তৈরি করছে ৪ টি ওয়াচ টাওয়ার।
দামোদরের পাড়ে গলসি থানা এলাকায় শিল্যাঘাট জেলা দাঁতালদের অন্যতম প্রবেশ পথ। শিল্যাঘাট ছাড়াও গলসি থানার গোগ্রামেও বসছে ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়াও বুদবুদ থানার কসবা এবং কাঁকসা থানার গড় জঙ্গলেও বসছে টাওয়ার। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি এই টাওয়ার নির্মাণের বরাত প্রক্রিয়া শুরু হয়। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বর্ষার মধ্যেও চলতে থাকে নির্মাণ। ৪টি ওয়াচ টাওয়ারের মধ্যে ৩টি কংক্রিটের। শিল্যাঘাটে লোহার ওয়াচ টাওয়ার হচ্ছে। ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২০ ফুট উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার চালু হবে নভেম্বর মাসের প্রথম দিকেই। এমনই জানিয়েছেন বন দপ্তরের বর্ধমানের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার দেবাশিস শর্মা।
গড় জঙ্গলের ওয়াচ টাওয়ারটিকে বহুমুখী ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে বনদপ্তর। হাতির উপর নজরদারি ছাড়াও প্রখর গ্রীষ্মে এই গভীর জঙ্গলের মাঝে আগুন লাগলে তা দূর থেকেই বন কর্মীদের নজরে পড়বে। এছাড়াও বনদপ্তরের উদ্যোগে কাঁকসার শিবপুর বিট এরিয়া থেকে অজয় নদ পর্যন্ত নয়া ট্রেকিং রুট চালু হচ্ছে শিগগিরই। শীতকালে ট্রেকিং করতে যাওয়া অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী পর্যটকরাও এই ওয়াচ টাওয়ার ব্যবহার করতে পারবেন। বনদপ্তরের বর্ধমান রেঞ্জের ডিএফও দেবাশিস শর্মার কথায়, “হাতির গতিবিধির উপর নজরদারি ছাড়াও ভ্রমণার্থীদের সুবিধার জন্য এই টাওয়ারগুলি তৈরি করা হচ্ছে। তারা যাতে টাওয়ারে উঠে জঙ্গলের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন, তার জন্যেও ব্যবহার করা যাবে টাওয়ারগুলি।” এখন শুধু টাওয়ারগুলি তৈরি হয়ে চালুর অপেক্ষা।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.