সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ধাপে ধাপে ঘরে ফিরছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত গুজরাট ও ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়গায় আটকে থাকা বাংলার ৩৬৫ জন শ্রমিক ফিরলেন পুরুলিয়ায়। রাজ্যের উদ্যোগে এই সংকটকালে পরিজনদের কাছে ফিরতে পেয়ে খুশি শ্রমিকরা। যদিও পুরুলিয়ায় পৌঁছলেও এখনও ঘরে যাননি অধিকাংশই। ঠাঁই কোয়ারেন্টাইনে।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের উদ্যোগে ঝাড়খণ্ডের মোট ১৪টি বেসরকারি বাসে ৩৪৫ জন শ্রমিককে পুরুলিয়া এনে প্রথমে দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হাতোয়ারা ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শ্রমিকদের কার্যত ‘বরণ’ করে নেন পুরুলিয়া জেলাপরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায়। এই শ্রমিকদের মধ্যে পুরুলিয়ার ১৮৪ জন, বাঁকুড়ার ৪৯ জন, বীরভূমের ১৬, মুর্শিদাবাদের ৯২ ও হাওড়ার ৪ জন রয়েছেন। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই বাসে করে গুজরাট থেকে পুরুলিয়ার জয়পুরের সীমানায় নাকা পয়েন্টে নেমেছেন ২০ জন। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জয়পুর কৃষক বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এই কুড়ি জনের মধ্যে পুরুলিয়ার বারো ও বাঁকুড়ার আট জন রয়েছেন। সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দু’দিন ধরে বাংলার বিভিন্ন জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদের গুজরাট ও ঝাড়খণ্ড থেকে রাজ্য সরকার ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগ সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরই তাঁদের বাড়িতে ফেরাবে। প্রয়োজনে এই জেলার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রেখে করোনা টেস্ট করে তারপর নিজ নিজ জেলায় পাঠানোর ব্যাবস্থা করবে। শ্রমিকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় আমরা সেটা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।”
প্রসঙ্গত, এদিন যে সকল শ্রমিক পুরুলিয়ায় ফেরেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই রীতিমতো ঘর-সংসার নিয়ে পেটের টানে ঝাড়খণ্ডে গিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ফিরে পুরুলিয়ার দোলন সোরেন, হাওড়ার শ্যামপুরের শেখ মোর্তাজা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জন্য কর্মস্থল থেকে এতো ভালভাবে ফিরতে পারলাম। ওনার জন্যই ঝাড়খণ্ডে আমাদের খাওয়ার কোনও অসুবিধা হয়নি। প্রতিদিন তিনবার খাবার পেয়েছি।” উল্লেখ্য, বহু শ্রমিকই লকডাউনের মধ্যেই হেঁটে বা বিকল্প উপায়ে কর্মস্থল থেকে পুরুলিয়ায় আসার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ঠাঁই হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে। এবার তাঁদের ঘরে ফেরাতে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ডিএসপি ট্রাফিককে মাথায় রেখে সাত সদস্যের একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে একটি হেল্প লাইনও চালু করেছে পুরুলিয়া জেলা পরিষদ।
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.