নন্দন দত্ত, সিউড়ি: একদিকে যখন অরণ্য সপ্তাহ পালিত হচ্ছে ,তখন অন্যদিকে হাজার হাজার গাছ বেআইনিভাবে কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। ফুলুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বেনিফিসারি কমিটি লিখিতভাবে জেলাশাসকের কাছে ৩০ হাজার গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ জমা দিয়েছে। একইসঙ্গে কোরলা থেকে বড়সিজা পর্যন্ত ওই এলাকায় অনুমোদিত গাছের বাইরে কত গাছ কাটা হয়েছে তার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগীয় বনাধিকারিক হরিকৃষ্ণণ। যদিও ফুলুর পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ ইউসুফ জানান, অনুমোদিত গাছ কাটার পর আট লক্ষ টাকা পঞ্চায়েত তহবিলে জমা পড়েছে। বেনিফিসারি দলকে তাদের প্রাপ্য ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
[শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রীকে গুলি করে খুন যুবকের, কোন্নগরে ‘লাভ জেহাদ’-এর ছায়া]
বিতর্ক তৈরি হয়েছে কত গাছ কাটা হয়েছে তাকে ঘিরে। ফুলুর পঞ্চায়েতের কোরলা থেকে বড়সিজা ক্যানেলপাড়ে প্রায় সাড়ে চার বিঘা এলাকায় বনসৃজন প্রকল্পে গাছ লাগান হয়। ২০০৪ সালে সেজন্য ১৩ জনের বেনিফিসারি একটি দল গঠন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী এই বেনিফিসারি দল গাছ বিক্রির সময় ২৫ শতাংশ টাকা পাবেন। কিন্তু বেনিফিসারিদের অভিযোগ বনদপ্তর মাত্র ১৯০০ গাছ কাটার অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত বিনা টেন্ডারে প্রায় ৩০ হাজার গাছ কেটে গুসকরার এক গাছ বিক্রেতাকে বিক্রি করেছে। যার বাজার মূল্য দু’কোটি টাকার উপর। কমিটি জেলাশাসককে অভিযোগ করেছে যে, গত ১৪ বছর ধরে পরিত্যক্ত ক্যানেলের দু’ পাড়ে যে গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করলেন, সেই জীবিত গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হল কীভাবে? প্রধান মহম্মদ ইউসুফ বলেন, “গাছ কাটার যাবতীয় দায়িত্ব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান সদস্য ডালিম বাগদিকে দিয়েছিলেন। আমি এ বিষয়ে খুব বেশি জানি না।” ডালিম বাগদি জানান, পঞ্চায়েতে লিখিত যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেখানেই দেখা যাবে, কার দায়িত্ব কি ছিল।
তিনি বলেন, “সাবের আলি পুরো বিষয়টি জানেন।” অন্যদিকে বেনিফিসারি কমিটির সদস্য শেখ আনিসুর জানান, যখন গাছ কাটছিল, আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু তৃণমূলের লোকজন জেল খাটানোর ভয় দেখিয়ে আমাদের চুপ করিয়ে দেয়। আমরা সাঁইথিয়ার বিডিওর কাছে সঙ্গে সঙ্গে লিখিতভাবে এই দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।” অন্য এক সদস্য শেখ রওশান আলি বলেন, “আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে রীতিমতো শাসানো হয়েছিল। বনাধিকারিক হরিকৃষ্ণান বলেন, “সংশ্লিষ্ট বিট অফিসারকে কাটা গাছের গুড়ি গুনে দেখতে বলা হয়েছে। যদি অনুমোদনের বেশি গাছ কাটা হয়ে থাকে, তাহলে আইনত শাস্তি ও জরিমানা হবে। সাঁইথিয়া তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান বলেন, “অনুমোদনের অর্ধেক গাছ কাটা হয়েছে। বাকি অর্ধেক কাটতে বাকি। তবে পঞ্চায়েতের বিষয়টি প্রধান ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চল সভাপতি বলতে পারবেন।”
[এও কি সম্ভব? ইরানের ভাগের মেঘ ও বরফ চুরি করে নিচ্ছে ইজরায়েল!]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.