পারমিতা গাইন: সম্প্রতি সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আশাতীত মার্কস হাঁকিয়ে নজির গড়েছে তিন বঙ্গকন্যা–সুস্মিতা ভুঁইয়া, সুমনা লোহার ও মৌমিতা রায়৷ অবশ্য এই অসম্ভব সম্ভবের নেপথ্যে রয়েছে কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ফ্রিড’-এর অসামান্য অবদান৷
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের প্রত্যন্ত তিনটি গ্রাম–লায়েকবাঁধ, রাধানগর আর সাঞ্চা গ্রামের তিন হতদরিদ্র পরিবারের তিন কিশোরী৷ কারও বাবা জঙ্গলে পাতা কুড়িয়ে দিন গেলে আশি থেকে একশো টাকা আয় করেন, কেউ মাছ বিক্রি করেন, কেউ আবার চাষবাস করে অতিকষ্টে দিন গুজরান করেন৷ তাঁদের কারও পক্ষেই দু’বেলা, নিদেনপক্ষে একবেলার অন্নসংস্থানের পর মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব ছিল না৷ অথচ হার মানতে নারাজ ছিল সুস্মিতা, সুমনা বা মৌমিতারা৷ এমন অবস্থায় ওদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ফ্রিড’৷ ‘ফ্রিড’-এর ফ্রি কোচিং সেন্টার, রোজকার টিউটোরিয়াল, পাঠ্য পুস্তকের গ্রন্থাগার আর মক টেস্ট সুস্মিতা, মৌমিতাদের স্বপ্নপূরণের পথকে মসৃণ করে তুলল বেশ খানিকটা৷ তাই আজ কলা বিভাগের তিন ছাত্রী সুস্মিতা, সুমনা আর মৌমিতার ঝুলিতে যথাক্রমে ৪১৪(৮২.৮ শতাংশ), ৩৯১(৭৮.২ শতাংশ) ও ৩৭৫(৭৫ শতাংশ) নম্বর৷ উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্যের পর এবার ওদের স্বপ্ন উড়ান দিগন্তব্যাপী৷ আর আগামী দিনেও ওদের চলার পথের দিশারি ‘ফ্রিড’৷
কলকাতার স্বেচ্চাসেবী সংস্থা ‘ফ্রিড’-এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়৷ আজও আমাদের গ্রামবাংলায় কত দরিদ্র-সহায়হীন ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করতে চেয়েও অপারগ৷ তাঁদের জন্য এগিয়ে আসেন আর ক’জন? একটু সাহায্য আর গাইডেন্স-এর অভাবে নষ্ট হয়ে যায় কত প্রতিভা! আজ তাদের উদ্দেশেই নিঃস্বার্থে হাত বাড়িয়েছে ‘ফ্রিড’৷ দারিদ্রসীমানার নিচে থাকা কিন্তু মেধাবী ও লেখাপড়া করতে ইচ্ছুক ৭০ জন মেয়ে ‘ফ্রিড’-এর ছত্রছায়ায় তাদের স্বপ্নপূরণের দিকে এগিয়ে চলেছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.