সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: টানা বৃষ্টির (Rain)দুর্যোগ কেটেছে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা থেকে। আর বিপর্যয় নেমে এসেছে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে। বাঁকুড়া (Bankura), পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমানে শুরু হয়েছে অঝোরধারায় বর্ষণ। আর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। আবহাওয়া রিপোর্ট বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বাঁকুড়ায় যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা গত ৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত রাঢ়বঙ্গের এই জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৫৪.৩ মিলিমিটার। ভেঙেছে শতাধিক কাঁচা বাড়ি। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি। তবে অজয় নদের (Ajay River) ফুলেফেঁপে ওঠা জলের তোড়ে তলিয়ে গিয়েছেন তিন গোপালক। তাঁদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। ডিভিসি জল ছাড়ায় বিপদ আরও বাড়ছে।
জানা যাচ্ছে, আউশগ্রামের সুন্দলপুরের নদীর চরে গরু চড়াতে গিয়েছিলেন কয়েকজন গোপালক। গরু চড়ানোর ফাঁকে দুপুর ১২ টা নাগাদ তিনজন মিলে খাবার খেতে বসেছেন। তখনই আচমকা নদী জলস্তর ছাপিয়ে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল জল। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের কল্যাণপুর গ্রামের কাছে অজয় নদের মাঝে তীব্র জলের স্রোতের মধ্যেই একটি চড়ে কোমরজলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন তিন গোপালক। আটকে পড়ে গরুগুলিও। খবর পেয়ে উদ্ধার করতে চলে আসে পুলিশবাহিনীও। তবে তীব্র স্রোতের মধ্যে কীভাবে উদ্ধারকাজ চলবে, তা নিয়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন সকলে।
জলের তোড়ে কোনওভাবেই উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি। শেষমেশ বিকেলের পর প্রশাসনের তরফে স্পিডবোট নামিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চলে। অন্যদিকে, বীরভূমের ইলামবাজারে অজয় নদে জল বাড়তেই নির্মীয়মাণ ব্রিজ তৈরির জন্য ব্যবহৃত পুরনো লোহার কাঠামোটি ভেঙে পড়ে। ব্রিজের কোনও ক্ষতি হয়েছে কিনা, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জল কমলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অজয়ের জল বাড়তেই জয়দেবের ফেরিঘাট ডুবে গিয়েছে। এর ফলে জয়দেব হয়ে বীরভূম থেকে বর্ধমান যাওয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে দামোদর নদে ২ লক্ষ ১০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হল দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। এর মধ্যে অজয় নদে ছাড়া হয়েছে ১ লক্ষ ৬৭ হাজার কিউসেক জল। তবে ডিভিসি ক্যানাল বা সেচখালে জল ছাড়া হয়নি।
আবহাওয়া দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১-এ রাজ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর কলকাতায় বাড়তি বৃষ্টির পরিমাণ ৯৬ শতাংশ। আসানসোলে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৩৪.৫ মিলিমিটার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.