দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: বনধের সকাল থেকেই থমথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) কুলতলি (Kultali)। প্রত্যন্ত গ্রামগুলি কার্যত জনমানবশূন্য। দূর-দূরান্তেও নজরে পড়ছে না কেউ। যদিও মফস্বলের ছবিটা কিছুটা অন্য। অশান্তির আশঙ্কা করে সকাল থেকেই এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। ওইদিনই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কুলতলি। অভিযোগ, অশ্বিনী মান্না নামে এক তৃণমূল কর্মী দলবল নিয়ে চড়াও হয় ওই এলাকার কিছু এসইউসিআই সমর্থকদের বাড়িতে। প্রায় ১০ টি বাড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর চালানো হয়। এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় কয়েকজনকে। তাতে আহত হয়ে পাঁচজন এসইউসিআই কর্মী। ভোলানাথ গিরি নামে এক তৃণমূল কর্মীও গুরুতর জখম। তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয় চিকিৎসার জন্য। এই ঘটনার পর এলাকার মানুষজন পালটা প্রতিবাদ শুরু করেন, গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয় যুব তৃণমূল কর্মী অশ্বিনী মান্নাকে। শনিবার সকালে এসইউসিআই জেলা কমিটির সদস্য সুধাংশু জানাকে বাড়ি থেকে বের করে মেরে বাড়ির সামনে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরপর দুটো খুনের ঘটনায় অশান্তির আগুনে যেন ঘি পড়ে।
নেতা সুধাংশু জানার খুনের ঘটনায় ফুঁসতে শুরু করে এসইউসিআই। সোমবার ২৪ ঘণ্টার বনধের ডাক দেয় তাঁরা। বনধ ব্যর্থ করতে উঠে পড়ে লাগে তৃণমূল। তবে জানা গিয়েছে, কুলতলিতে মিশ্র প্রভাব পড়েছে বনধের। গ্রামের দিকের দোকানপাট বেশিরভাগই বন্ধ। রাস্তায় লোকজনের দেখাও নেই। কারণ, আতঙ্ক এখনও তাঁদের পিছু ছাড়েনি। সেই সঙ্গে গ্রামের পুরুষশূন্য পরিবারগুলো অশান্তির আবহে ঝুঁকি নিতে চাননি। যদিও উলটো ছবিও দেখা গিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। কুলতলির একাংশে স্বাভাবিক ছন্দেই চলছে জনজীবন। খুলেছে দোকানপাট। হিংসার কথা ভুলে পথে নেমেছে বহু মানুষ। তবে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ এখনও মোতায়েন রয়েছে ওই এলাকায়। প্রসঙ্গত, রবিবার রাতেই গ্রামে ফিরেছে মৃত তৃণমূল ও SUCI কর্মীর দেহ। ইতিমধ্যেই দাহের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.