নিজস্ব চিত্র
রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ভোট আসে ভোট যায়। হরেক প্রতিশ্রুতি শোনা যায় বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের মুখে। ব্য়স! ওই টুকুই। ভোট মিটলে তাঁদের দিকে তাকান না নেতারা। এমনই অভিযোগ চর মেঘনার বাসিন্দাদের। এই গ্রামটিতে মূলত আদিবাসী সম্প্রদায় মানুষের বসবাস। গ্রামের বাসিন্দাদের আক্ষেপ, ভারতের অংশ হয়েও কাঁটাতারের ঘেরাটোপের মধ্যে অসহ্য মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে জীবনযাপন করছেন। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি গ্রামের বাইরে দিয়ে বাংলাদেশের সীমানা দেওয়া হোক। তা এখনও পর্যন্ত হয়নি। বাসিন্দাদের প্রশ্ন আর কতদিন বন্দি পাখির মত থাকতে হবে তাঁদের? এই প্রশ্ন মনে রেখেই এবারও ভোট দিলেন এখানকার বাসিন্দারা।
গত নির্বাচনগুলির মতো এবারও চর মেঘনা (Char Meghna) প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্র করা হয়েছে। মোট ভোটার ৬০৯ জন। তার মধ্যে ৩১৫ পুরুষ। ২৯৫ জন মহিলা। ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল (Sushma Swaraj) বিনিময় হলেও সেই তালিকায় চর মেঘনার নাম ছিল না। যদিও চর মেঘনা গ্রাম ছিটমহল নয়। ভারতীয় ভূখণ্ডের অ্যাডভান্স পজিশনে এই গ্রামটি ছিল। গ্রামবাসীরা সুষমা স্বরাজকে চিঠি দেওয়ার পর,এই গ্রামকে ভারতের অংশ করা হয়। কিন্তু ওইটুকুই। কাঁটাতারের বেড়ার গণ্ডি ঘোচেনি। এবারেও গণতন্ত্র রক্ষার অধিকার প্রয়োগ করলেন কাঁটাতারের ওপার থেকেই।
গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, দুঃখ কষ্টের কথা যাঁদের শোনার কথা সেই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধান, বিধায়ক থেকে সাংসদ কেউই তাঁদের সমস্যার প্রতি গুরুত্ব দেন না। বিদায়ী সাংসদ একেবারে জন্যও গ্রামের মানুষের দুর্দশার খোঁজ নিতে কাঁটাতারের গেট পেরিয়ে গ্রামে যাননি। গ্রামের সকলেরই ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে কিন্তু ভারতীয় ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।
গ্রামের বাসিন্দা অমিত মাহাতো জানান, আমাদের গ্রামে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি তৃণমূল সব দলের লোকেরা আছেন। রাজনৈতিক লড়াই হলেও আমাদের বাঁচার লড়াই কিন্তু সকলে মিলে একসঙ্গে। আমাদের গ্রামের অভিভাবক বলতে জনপ্রতিনিধিরাই, কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলে তাঁদের আর দেখা মেলে না। শুধু কাঁটাতারের বাঁধা নয়। গ্রামের আরও সমস্যা রয়েছে। তাও মেটে না বলেই অভিযোগ। এইভাবেই দিনের পর দিন কাটছে। ‘২৪-এর হাওয়ার পরও এই বন্দি দশা থেকে রেহাই মিলবে কি না জানা নেই। উত্তর সেই কালের গহ্বরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.