ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কাঁথি লোকসভায় বিজেপির অন্দরে বড়সড় ফাটল। সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ‘আদি’ বিজেপি নেতা বিদেশ বসু মাইতিকে প্রার্থী করল হিন্দু মহাসভা। বিজেপি নেতা বিদেশ বসু হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর কাছে চিঠি লিখে তাঁকে সমর্থনের দাবি জানান। তাতে সম্মতি জানিয়ে বিক্ষুদ্ধ বিজেপি নেতার পাশে দাঁড়ল দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বলে দাবি করা এই হিন্দুবাদী সংগঠন।
শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির সংগঠনে তাঁর ও অধিকারী পরিবারের দাপট বেড়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, যা নিয়ে আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এমনকী অনেক আরএসএস (RSS) কর্মকর্তা সাংগঠনিক কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ। এই আবহে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু (Soumendu Adhikari) কাঁথি লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় আগুনে ঘি পড়ে। প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন আদি বিজেপি (BJP) নেতা বলে পরিচিত বিদেশ বসু। এদিকে যাদবপুর, বাঁকুড়া, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণের মতো কেন্দ্রগুলোতে হিন্দু মহাসভা নিজেরা প্রার্থী দিয়েছে বা নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করেছে। এবার কাঁথি (Contai Lok Sabha) কেন্দ্রেও বিদেশবাবুকে সর্মথন করল তাঁরা। বিদেশবাবু মহাসভার সমর্থন পাওয়ার ফলে এই আসনে বিজেপির লড়াই বেশ কঠিন হল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
হিন্দু মহাসভার সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন, “শুধু বিজেপি বা সংঘ নয় যে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রকৃত সনাতনী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যাঁরা খোলা মনে রাজনীতি করতে না পেরে নিজের দলেই কোণঠাসা তাঁদের জন্য হিন্দু মহাসভার দরজা সব সময় খোলা।” তাঁর আরও সংযোজন, “ঠান্ডা ঘরে থেকে বা এসি গাড়িতে চেপে হাত নাড়িয়ে যেমন রাজনীতি হয়না। সেই রকমই শুধুমাত্র দাদা বিরোধী দলনেতা হওয়ার প্রার্থী হওয়া, সুস্থ রাজনীতির ক্ষেত্রে ভালো বিজ্ঞাপন নয়। মানুষ কাচ আর হীরের পার্থক্য বুঝে বিদেশবাবুকে নির্বাচিত করবেন। হিন্দু মহাসভাতে রাজনীতি করতে হলে রোদে পুড়ে, জলে ভিজে, মানুষের মধ্যে থেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাটি কামড়ে রাজনীতি করতে হয়।” কাঁথিতে হিন্দু মহাসভা প্রার্থী হিসেবে বিদেশবাবুকে সমর্থন করায় কাঁথির ভোটযুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী অস্বস্তিতে পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সম্প্রতি অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার (Akhil Bharat Hindu Mahasabha) রাজ্য সভাপতির দায়িত্বে থাকা স্বামী সুন্দর গিরি মহারাজ মুখ খুলে জানান, কিছুদিনের জন্য কার্যকরী সভাপতি থাকলেও চন্দ্রচূড় আদৌও রাজ্য সভাপতি নন। এমনকী আসন্ন লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করছে না হিন্দু মহাসভা। এই জলঘোলার মধ্যেই ফের নির্দল প্রার্থীর সর্মথনে পাশে এসে দাঁড়ালেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.