অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়: লোকসভা নির্বাচন (2024 Lok Sabha Election) শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রথম দফা শেষ। সামনেই দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। তাতে অংশ নেবে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র। আগামী ১ জুন পর্যন্ত ভোট চলাকালীন জারি রয়েছে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি। তার মাঝেই শনিবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান করতে বসেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠায় মাঝপথেই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হল তাঁকে। জানা গিয়েছে, ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের বিরোধিতায় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গৌতম দেবের অনুষ্ঠান মাঝপথ থেকে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয় কমিশনের তরফে। মাঝপথে এভাবে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ গৌতম দেব।
নাগরিক পরিষেবা আরও উন্নত করার লক্ষ্যে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান মূলত চালু করেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। প্রতি শনিবার বিকেলে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি পুরসবাসীর সমস্ত অভাব-অভিযোগ সরাসরি টেলিফোনের মাধ্যমে শোনেন, সমাধানের পথ বাতলে দেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করেন। সেভাবেই শহরের একাধিক সমস্যার সমাধান হয়েছে। ফিরহাদ হাকিমের এই অনুষ্ঠানে অনুপ্রাণিত হয়ে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও একই রকমভাবে ‘টক টু মেয়র’ (Talk to Mayor) অনুষ্ঠান শুরু করেন।
তবে নির্বাচনী আচরণবিধি (MCC) চালু থাকাকালীন এধরনের যে কোনও পরিষেবামূলক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। সেইমতো ফিরহাদ হাকিমও নিজের অনুষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু শনিবার গৌতম দেব বেলা ১১টা নাগাদ ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান শুরু করেন। ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। আধঘণ্টা অনুষ্ঠানের পর আচমকাই তা বন্ধ করে দিতে হয়। কমিশনের নির্দেশ আসে, এই অনুষ্ঠান করা যাবে না। প্রসঙ্গত, এই অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগেই নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) শংকর ঘোষ। তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এদিনের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।
এভাবে মাঝপথে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ গৌতম দেব (Gautam Deb)। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা একটা ধারাবাহিক অনুষ্ঠান৷ নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission of India) চিঠি দিয়ে এই অনুষ্ঠান আমি চালিয়ে যাই। কারণ, এটা নতুন কোনও অনুষ্ঠান নয়। কমিশনের নির্দেশে বলা আছে, নতুন কিছু করা যাবে না। এখানকার বিধায়ক সেটা নিয়ে একটা অভিযোগ করেন। তবে কমিশনের কাছ থেকে আমরা কোনও নির্দেশ পাইনি, তাই আজ অনুষ্ঠান শুরু করেছিলাম। মাঝপথেই মৌখিক নির্দেশ আসে অনুষ্ঠান বন্ধের। বলা হয়, এটা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে যে, এই অনুষ্ঠান সম্প্রচারে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। তাই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে মান্যতা দিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করেছি। তারা কৈফিয়ত চেয়ে পাঠিয়েছি। তার উত্তর পুরনিগম থেকে যাবে। তবে এটা সম্পূর্ণ রাজনীতি করে বন্ধ করে দেওয়া হল। বিজেপির ইন্ধনে এটা হয়েছে। মানুষের সমস্যার কথা এরা ভাবে না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.