দেব গোস্বামী, বোলপুর: দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি তিনি। গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েকদিন পর থেকে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এই প্রথম তাঁকে ছাড়াই বীরভূমে নির্বাচন হয়ে গেল। আর চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের শেষলগ্নে এসে বন্দি দশা থেকেই বার্তা দিলেন কেষ্ট। তাঁর অনুপস্থিতিতে জেলার দলীয় সংগঠনে অনেক ফাঁকফোকর তৈরি হয়েছে, তা জানতে পেরেই অনুগামীদের উদ্দেশে কেষ্টর বার্তা, “আমায় ফিরতে দে, তার পর যা বলার বলব।”
বীরভূম (Birbhum) থেকে বহু দূরে তিহাড় জেলে বন্দি থাকলেও দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের আত্মবিশ্বাস কমেনি এতটুকুও। তাঁর দাবি, ভোটের পরই জেল থেকে বেরবেন তিনি। এমনকী আবার নিজের হাতেই সাজাতে পারেন তৃণমূলের সংগঠন। তিহাড় জেলে বসেও সব খবরাখবর নেন তিনি। জেলার রাজনীতি, রাজ্য রাজনীতি থেকে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক খবরাখবর রাখেন অনুব্রত (Anubrata Mondal)। যাঁরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে জেলে যান, তাঁদের কাছ থেকে সমস্ত খবর নেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি।
এবার তাঁদের মাধ্যমেই দলের কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন কেষ্ট। তাঁর অনুপস্থিতিতে যে জেলার বেশ কয়েকজন নেতা সংগঠনের মাথা হয়ে বসতে চাইছে, এমন খবর তাঁর কানে গিয়েছে। দলের অন্দরে ‘বিদ্রোহে’র আভাস পেয়েছেন কেষ্ট। এসব তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, জেলে থাকলেও খাতায়-কলমে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই। কিন্তু তার পরেও জেলার কয়েকজন নেতা নিজেদের মতো করে এলাকায় দল চালাতে চাইছেন বলে গুঞ্জন শুনতে পেয়েছেন তিনি। যা একেবারেই নাপসন্দ।
তিহাড়ে (Tihar Jail) অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীদের একাংশের দাবি, “বীরভূম-সহ রাজ্য রাজনীতির সব খবর নিতে চান তিনি। তাঁর অস্তিত্ব জেলা থেকে মুছে দিতে চাইছে দলের একাংশ, এমন খবর পেয়েছেন কেষ্ট নিজে। তাই বীরভূমের কয়েকজন নেতার উপর খুবই রেগে রয়েছেন তিনি।” সময়ের পরিবর্তনে একসময় তাঁর কথায় যেসব নেতা–কর্মীরা চলত, তাঁরাই এখন সম্পূর্ণ ভোল বদলেছে। আর তার জেরেই কর্মীদের মারফত জেলা সংগঠনকে বার্তা পাঠিয়েছে, “আমায় ফিরতে দে, তার পর যা বলার বলব।” যদিও এ প্রসঙ্গে বীরভূমের তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যরা কেউ মন্তব্য করতে চাননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.