নন্দন দত্ত ও সোমনাথ পাল: গৃহবধূকে তালাবন্ধ ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে গৃহবধূর দেওরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে নৃশংস ঘটনাটি ঘটিয়ে পলাতক বাকি সদস্যরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মহম্মদবাজারের হেরুকাগ্রামে।
মৃত গৃহবধূর নাম চম্পা বিবি। গত বৈশাখেই সাঁইথিয়ার হড়পলশা গ্রামের আল্লারাখার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বাবা-মা মরা চম্পার নিজের বলতে কেউই ছিলেন না। হেরুকা গ্রামের লোকজন ক্লাবের সদস্যরা চাঁদা তুলে দেখে শুনে তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই মেয়ের মৃত্যুর খবরে হেরুকা গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, শনিবার রাতে মারধরের পর পরিকল্পনা করে ওই গৃহবধূকে ঘরে ঢুকিয়ে দেয় বাকি সদস্যরা। সেখানেই গ্যাস সিলিন্ডার খুলে রাখা ছিল। গ্যাসে ভরে ছিল ঘরটি। আচমকাই আগুন লাগিয়ে দিতে দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে সেই ঘর। বন্ধ ঘরে পুড়ে মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। রাতে কুকীর্তি করে পালিয়ে যায় গোটা পরিবার। শুধু দেওর নাজিবুল থেকে যায়। তারও শ্বশুরবাড়ি হেরুকা গ্রামে। এদিন সকালে বউদির মৃত্যুর খবর দিতে হেরুকা পল্লি উনন্নয়ন সমিতিতে আসে ওই যুবক। চম্পা বিবির মৃত্যুর খবর ছড়াতেই উত্তেজিত হয় পড়েন ক্লাবের সদস্যরা। গ্রামে খবর যেতেই ক্ষুদ্ধ জনতা নাজিবুলকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করে। মারের চোটে বউদিকে পুড়িয়ে মারার কথা স্বীকার নেয় ওই যুবক। এরপর ফের মারধর শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতার কবল থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই শারীরিকভাবে অত্যাচারিত হতেন ওই গৃহবধূ। প্রায়ই দিন স্বামী আল্লারাখার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাড়ির অন্যান্যরাও মারধর করত। এমনকী, নন্দাইও বউদির গায়ে হাত দিতে বাদ দেয়নি বলে অভিযোগ। যেহেতু বামা-মা মরা মেয়ে, তাই নালিশ করার কেউ নেই। কেন মেরেছে, তার জবাবদিহি চাইতে কেউ আসবে না। তাই উঠতে বসতে জুটতো মার। শনিবার রাতে মারধরের পর ক্লান্ত হয়ে ঘরে পড়েছিলেন ওই গৃহবধূ। তখনই তাঁকে পুড়িয়ে মারে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এক বছরের মধ্যে চম্পার মৃত্যুর ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন হেরুকা গ্রামের বাসিন্দারা। পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে পণের দাবিতে গৃহবধূকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মৃতার নাম সংগীতা রায় (২৫)। বাগদা থানার হেলেঞ্চা এলাকার ঘটনা। এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম কঙ্কন রায়।ওই দম্পতির বছর চারেকের এক শিশুকন্যাও রয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.