সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু (Tapan Kandu) হত্যাকাণ্ডের কিনারা হয়ে গেলেও দুই ‘ভাড়াটে খুনি’ এখনও অধরা। তবে তাদের চিহ্নিত করে নিয়েছে এই খুনের তদন্তের স্বার্থে গঠিত হওয়া সিট (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা SIT)। আর তাদেরকে হাতে পেতেই পুরুলিয়া (Purulia Police) জেলা পুলিশের দু’টি টিম ভিন রাজ্যে গিয়েছে। একটি টিম ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে বিহারের গয়ায়। আরেকটি টিম পা রেখেছে ঝাড়খণ্ডের রামগড়ে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন জানান, তদন্ত চলছে।
২০ দিনের মাথায় এই খুনের ঘটনার কিনারা হয়ে গেলেও ‘ভাড়াটে খুনি’ হাতে না আসা পর্যন্ত স্বস্তি নেই পুরুলিয়া জেলা পুলিশের। তাই বিহার (Bihar)- ঝাড়খন্ডে (Jharkhand) পুরুলিয়া জেলা পুলিশের দুটো টিম পা রেখে দুই ‘ভাড়াটে খুনি’-কে হন্যে হয়ে খুঁজছে। ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার জরিডি থানার গাইছাদ গ্রামের বাসিন্দা কলেবর সিংকে জেরা করেই দুই ‘ভাড়াটে খুনি’-র নাম-ঠিকানা পায় পুলিশ। গত ১৩ মার্চ বিকালে খুনের ঘটনার দিন মোটরবাইকে যে তিন জন আততায়ী ছিল তারমধ্যে ওই দুই ‘ভাড়াটে খুনি’ ছাড়াও আরেকজন কে ছিল, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃত কলেবরকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, তারা আরও একটি মোটরবাইকে এই খুনের অপারেশনের উপর দূর থেকে নজর রাখছিল। যাতে অপারেশন সেরে খুনিদেরকে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ দূরত্বে পাঠিয়ে দেওয়া যায়। তবে এখনও এই ঘটনায় বেশ কিছু মিসিং লিংক রয়ে গিয়েছে।
ধৃতদেরকে পৃথক পৃথকভাবে জেরা করার পাশাপাশি মুখোমুখি বসিয়ে সেই মিসিং লিংক মেলানোর কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খুনের ঘটনার দু’দিন পরেই ১৫ মার্চ নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের ভাইপো তথা তৃণমূলের পুর প্রার্থী দীপক কান্দুকে গ্রেপ্তার করে সিট। খুনের ২০ দিনের মাথায় অর্থাৎ ১ এপ্রিল এই ঘটনার অন্যতম মূল চক্রী কলেবর সিংকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর তাকে গ্রেপ্তার করে এই ঘটনার প্রায় কিনারা করে ফেলে পুলিশ। মূল ষড়যন্ত্রকারী অর্থাৎ এই খুনের জন্য ঝালদার কুটিডির বাসিন্দা একসময় বিহারে থাকা আসিক খানকে পাঁচ লক্ষ টাকার সুপারি দিয়েছিল নিহতের দাদা নরেন কান্দু। তারা দু’জনই এখন পুলিশের জালে। শনিবার সন্ধেয় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সুপারি পেয়ে আসিক যোগাযোগ করে কলেবরের সঙ্গে। কলেবর ভিন রাজ্যের দুই ‘ভাড়াটে খুনি’-র সঙ্গে এই অপারেশনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে।
ওই দুই ‘ভাড়াটে খুনি’র নাম- ঠিকানা জানার পাশাপাশি তাদের ছবি বা চেহারা পুরুলিয়া জেলা পুলিশের হাতে রয়েছে কিনা সে বিষয়ে এখন কিছুই বলতে চাইছে না সিট। মোটরবাইকে চেপে খুব কাছ থেকে যে গুলি চালিয়েছিল সেই ‘ভাড়াটে খুনি’-র স্কেচ প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী সিআইডি তৈরি করে দিয়েছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশকে। ওই স্কেচ ‘ভাড়াটে খুনি’-দের খুঁজতে যে সাহায্য করছে তা একেবারে পরিষ্কার। ওই স্কেচ ধৃত কলেবরকেও দেখানো হয়। এদিকে এই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী নিহতের দাদা নরেন কান্দু ও তার সহযোগী আসিক খানকে আজ পুরুলিয়া আদালতে তোলার প্রস্তুতি চলছে। এদিন সকালেই তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা হয় দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.