ছবি: প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: পরকীয়ায় মজে দেড় মাস আগে স্বামীর ঘর ছেড়ে মাসির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্ত্রী। মাসির বাড়িতেই প্রেমিকের সঙ্গে সহবাস শুরু করেন। সে খবর ছিল স্বামীর কাছেও। ক্ষুব্ধ স্বামী স্ত্রীকে বাড়ি ফেরাতে মাসিশ্বাশুড়ির বাড়িতেও আসে। কিন্তু ফিরতে রাজি হননি স্ত্রী। তারই পরিণতি হল মর্মান্তিক। এই আক্রোশে গভীর রাতে পেট্রল ঢেলে স্ত্রীর মাসি ও মেসোর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ওই ব্যক্তি বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মাসির। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেসো চিকিৎসাধীন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার বাসুদা গ্রামে সোমবার রাত প্রায় বারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃতা জ্যোৎস্না মালের (৪২) স্বামী অজিত মাল (৪৭) আপাতত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনায় অভিযুক্ত কৃষ্ণ মালিকের বাড়ি হুগলির পাণ্ডুয়ায় বলে জানা গিয়েছে। পেশায় সোনা-রুপোর গয়নাশিল্পী। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক। তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
ভাতারের কুমারুন গ্রামের মেয়ে রুমকির সঙ্গে প্রায় ৫ বছর আগে বিয়ে হয় কৃষ্ণর। তাঁদের একটি সন্তানও রয়েছে। রুমকির দাবি, তাঁর স্বামী বরাবরই তাঁর উপর অত্যাচার চালাত। রুমকির মা কৌশল্যাদেবী বলেন, “জামাইয়ের অত্যাচারেই আমার মেয়ে দেড় মাস আগে আমার কাছে চলে আসে। তারপর কথনও কুমারুনে, কখনও আমার বোন জোৎস্নার কাছে থাকছিল।” এদিকে রুমকি নিজেই জানান, তাঁর সঙ্গে গত পাঁচ মাস ধরে পাণ্ডুয়ার কাছাকাছি হরাল দাসপুর এলাকার এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্ক চলছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রুমকির সেই প্রেমিক রবিবার বাসুদা গ্রামে আসেন। দু’দিন ধরেই সেখানেই ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা ধীরেন মাল, নিষাণ মালদের কথায়, “সোমবার কৃষ্ণ মাল তার স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসে। রুমকি যেতে রাজি হয়নি। এনিয়ে কৃষ্ণর সঙ্গে অজিত মালদের ঝামেলা হয়। তারপর কৃষ্ণ চলে যায় কাছেই বোনের বাড়ি। সুযোগ বুঝে গভীররাতে অজিত মালের বাড়িতে এসে এই কাণ্ড ঘটায় বলে জানতে পারি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে একটি ঘরে শুয়েছিলেন রুমকি ও তাঁর প্রেমিক। পাশের ঘরে ছিলেন রুমকির মা কৌশল্যাদেবী, অজিতবাবুর ছেলে অরণ্য, দুই মেয়ে ও আর একজন বালক। ঘরের খো্লা বারান্দায় ঘুমোচ্ছিলেন অজিতবাবু ও জ্যোৎস্নাদেবী। এরপরই চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে দেখেন দগ্ধ অবস্থায় পড়ে জ্যোৎস্নাদেবী। অজিতবাবু জলন্ত অবস্থায় বাড়ির পাশে পুকুরে ঝাঁপ দেন। বাকি দু’টো ঘরের বাইরে থেকে শিকল তোলা ছিল। তবে জানলা খোলা থাকায় তাঁরা সেখান দিয়ে লাফিয়ে বেরিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচায়। রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভাতার থানার পুলিশ। জ্যোৎস্না মালের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো। পরিবারের লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.