ধৃত পাচারকারী। ছবি: সুশান্ত পাল।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ভিনরাজ্যে নাবালক পরিযায়ী শ্রমিক পৌঁছে দিতে পারলেই প্রতিমাসে মাথাপিছু ৬০০ টাকা করে কমিশন। সেই টাকার লোভে বিহার ও বাংলা থেকে বেঙ্গালুরুতে নাবালক শ্রমিক পাচার করতে গিয়ে মঙ্গলবার ভোররাতে ধরা পড়ল শ্রমিক পাচারের দুই দালাল। তাদের কাছে উদ্ধার হল ১০ জন নাবালক শ্রমিক। নাবালকদের জেলা শিশু সুরক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে বহরমপুরের হোমে পাঠান হয়। অন্যদিকে ধৃত বিহার ও মালদার দুই পাচারকারীকে মঙ্গলবার রামপুরহাট আদালতে তোলে সাঁইথিয়া জি আর পি। ধৃতদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিহারের ৬ জন ও মালদার ৪ জন নাবালককে নিয়ে বেঙ্গালুরু যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল দুই পাচারকারী। তারা হল বিহারের সঞ্জয় কুমার ও মালদহের মহম্মদ আবদুল্লা। বিহারের চম্পারণ জেলার মধুবনি থানার ৫ জন ও রেজপুর থানার একজনকে নিয়ে ১৫২২৮ ডাউন বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসে চড়েন সঞ্জয়কুমার। মালদহ থেকে তাদের নির্দিষ্ট কামরা এস ওয়ান কোচে চারজনকে নিয়ে চড়েন আবদুল্লা। এদিকে ভিন রাজ্যে নাবালক শ্রমিক পাচারের খবর পেয়েই সে নিয়ে তৎপরতা বাড়ায় ‘বচপন বাঁচাও’ কমিটি।
তারা মালদহের আর পি এফ সন্তোষ কুমারকে ফোনে নির্দিষ্ট ট্রেনের কামরা ও নাবালকদের ঠিকানা দিয়ে অভিযোগ জানান। সন্তোষ কুমার হাওড়া জিআরপির সঙ্গে যোগাযোগ করলে রামপুরহাটে ভোররাতে ট্রেন দাঁড়াতেই নাবালকদের উদ্ধার করে, গ্রেপ্তার করা হয় দুই পাচারকারীকে। সকালে সাঁইথিয়া থানার হাতে শিশু ও পাচারকারীদের তুলে দেওয়া হয়। শিশু সুরক্ষা কমিটির জেলা আধিকারিক নিরুপম সিনহা জানান, “মঙ্গলবার সকালে রেল আমাদের হাতে ১০ নাবালককে তুলে দেয়। আমরা তাদের বহরমপুরের কাজি নজরুল হোমে পাঠিয়ে দিয়েছি।”
এদিকে দুই পাচারকারীকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। তারা জানায় বিহার থেকে নাবালক শ্রমিক পৌঁছে দিতে পারলে প্রতিমাসে মাথাপিছু ৬০০ টাকা দিত সংস্থা। মালদহের আবদুল্লাকে দিত ৫০০ টাকা। এর আগেও তারা এভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। রামপুরহাট আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী আলি ওহাইদুর জামান জানান, “অবৈধ মানব পাচার সহ একাধিক ধারায় ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে সাঁইথিয়া থানার জিআরপি। অভিযোগকারী সন্তোষ কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মামলা করা। ধৃতদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.