সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলাকে সামনে রেখে ডায়মন্ড হারবার থেকে সাগরভূমির কচুবেড়িয়ায় চালু হয়ে গেল ক্রুজের যাত্রা। জলপথে এই যাত্রার উদ্বোধন হয় ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাটে। উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান প্রণব দাস, ভাইস-চেয়ারম্যান রাজর্ষি দাস সহ অন্যান্য কাউন্সিলর ও পুরসভার আধিকারিকরা।
ডায়মন্ড হারবার পুরসভা ও বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ডায়মন্ড হারবার ফেরিঘাট থেকে গঙ্গাসাগরের কচুবেড়িয়া ঘাটে এখন থেকে চলাচল করবে ক্রুজ। মাত্র দু’ঘন্টায় তীর্থযাত্রীদের এই ক্রুজ ডায়মন্ড হারবার থেকে পৌঁছে দেবে কচুবেড়িয়ার ঘাটে। এর ফলে পর্যটনশিল্পে পুরসভার কাছে এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল বলে কর্তৃপক্ষের আশা। কাকদ্বীপের লট নাম্বার ৮ ও সাগরের কচুবেড়িয়ার মধ্যে মুড়িগঙ্গার নাব্যতা অনেক কমে যাওয়ায় ভেসেল চলাচলে প্রায় সময়ই বিঘ্ন ঘটে। ভাঁটা চলাকালীন পূণ্যার্থীদের এই নদীপথ পার হওয়ার জন্য প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করে বসে থাকতে হয়। ক্রুজ চালু হওয়ায় এখন আর সে সমস্যা রইল না। কারণ জলপথে দ্রুতগতিতে এই যান সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপের কাছ দিয়ে কচুবেড়িয়া ঘাটে পৌঁছবে। নদীর ওই পথে জলের নাব্যতা খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করে না। সাগরমেলার সময় বা পরবর্তীতে তীর্থযাত্রীদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে থাকার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতেই পুরসভার এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন পুরচেয়ারম্যান প্রণব দাস।
এই উদ্যোগ নিয়ে বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার ক্যাপ্টেন অঞ্জন সিনহা জানান, সাগরমেলার সময় আগামী ১৩-১৪ ও ১৫ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবার ও কচুবেড়িয়ার মধ্যে তিনদিনই ক্রুজের তিনটি করে ট্রিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার ওই তিনদিন যাতায়াতের ভাড়া ধার্য হয়েছে তিনহাজার টাকা। কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে কপিলমুনির মন্দির সংলগ্ন এলাকায় সড়কপথে পৌঁছে দিতে তীর্থযাত্রীরা চাইলে তাঁদের সংস্থা আলাদা ভাড়ায় যানবাহনের ব্যবস্থাও করে দেবে। তবে দেশ-বিদেশের বহু তীর্থযাত্রী ও পর্যটক ইতিমধ্যেই মেলার সময়ের ওই তিনদিন অনলাইনে ক্রুজের সমস্ত আসন বুকিং করে ফেলেছেন বলে জানান তিনি। সংস্থার কর্ণধার আরও জানান, মেলার সময় ছাড়া সাধারণ সময়ে শুক্র, শনি ও রবি এই তিনদিন ডায়মন্ডহারবার ও কচুবেড়িয়ার মধ্যে ক্রুজ চলবে। সেইসময় যাতায়াতের ভাড়া ধার্য হয়েছে এক হাজার টাকা।
উপ পুরপ্রধান রাজর্ষি দাস বলেন, ১৭৬ আসনের ক্রুজটি সকাল সাড়ে ন’টায় কচুবেড়িয়ার উদ্দেশ্যে ডায়মন্ড হারবার থেকে ছাড়বে। ফিরতি পথে কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ক্রুজের যাত্রা শুরু হবে। তিনি বলেন, আগামীদিনে ডায়মন্ড হারবার থেকে দিঘা ও পুরীতে খুব কম সময়ে জলপথে ক্রুজের যাত্রা শুরু হতে চলেছে। এ জন্য ট্রায়াল রানও হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও পর্যটকদের জন্য ডায়মন্ড হারবার থেকে বাংলাদেশ জলপথে যাত্রায় ৬৬০ আসন বিশিষ্ট একটি জাহাজ চালানোরও পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভার। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসদীয় কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারকে পর্যটন মানচিত্রে বিশেষ স্থান করে দিতেই পুরসভার এমনই সব উদ্যোগ বলে উপ পুরপ্রধান জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.