সুমন করাতি, হুগলি: ১৭ দিনের মাথায় অপেক্ষার অবসান। এবার ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে। উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ সংকট কাটতেই খুশির হওয়া হুগলি জেলার পুরশুরা এলাকার দুই পরিবারে। ১৭ দিন ধরে পাখিরা পরিবারের ছেলে সৌভিক ও প্রামাণিক পরিবারের ছেলে জয়দেব উত্তরকাশিতে (Uttarkashi) কাজে গিয়ে বিরাট বিপদে পড়েছিলেন। আচমকা ধস নামায় সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে পড়েন তাঁরা। দুঃসংবাদ শোনার পর থেকেই উৎকণ্ঠায় দিন কাটছিল দুই পরিবারের সদস্যদের। তবে আজ সকাল থেকেই ভালো খবর শোনার অপেক্ষায় টিভি সামনে বসেছিলেন ওঁরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার পর সত্যিই সেই বহু কাঙ্ক্ষিত খবর মিলল- শেষ হয়েছে দুঃস্বপ্নের প্রহর। সুড়ঙ্গ থেকে মুক্ত হয়েছেন সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জনই। পাখিরা ও প্রামাণিক পরিবারের ছেলেরাও রয়েছেন তাঁদের মধ্যে।
এই খবর পাওয়ার পরেই আনন্দে চোখে জলে ভরে ওঠে সৌভিক ও জয়দেবের পরিবারের সদস্যদের। আবেগাপ্লুত সৌভিক পাখিরার মা বলেন, “এত দিন কিছুই বুঝতে পারছিলাম না কী হবে। শুধু ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছিলাম। দিনের পর দিন কাটছিল, উদ্ধারকাজে বাধা আসছিল। কিন্তু আজ জানতে পারলাম যে উদ্ধারকাজ শেষ। ছেলে অন্ধকার সুড়ঙ্গ থেকে বেরোতে পেরেছে। এটা জানতে পেরে যে আনন্দ হচ্ছে তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।” আরও বলেন, “ঘরের ছেলেটা ঘরে ফিরবে। সব থেকে খুশি হব, যখন ছেলের গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে পারব। ছেলের থেকে মা ডাক শুনতে পারব। ভগবানের কৃপা! ভগবানের কাছে প্রার্থনার ফল এতদিনে পাওয়া গেল।”
পরিবারে স্বস্তি ফিরলেও আপাতত জয়দেব প্রামাণিকের বাবা ও মা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তাঁদের এক প্রতিবেশী বলেন, “ছেলের সুড়ঙ্গে আটকে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই জয়দেবের মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কথা বলার মত অবস্থায় নেই। ছেলে বাড়ি ফিরবে সেই খবর পেয়েছেন। এবার সব ঠিক হবে। এলাকার ছেলে এত বড় বিপদের মুখ থেকে ফিরছে, এটা খুবই খুশির খবর।”
প্রসঙ্গত, সিল্কিয়ারা এবং দণ্ডলগাঁওয়ের মাঝে তৈরি হচ্ছিল উত্তরকাশীর (Uttarkashi) ওই সুড়ঙ্গটি। সেখানেই আচমকা ধস নামে। টানেলটি সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা। তারই মধ্যে ১৫০ মিটার লম্বা এলাকা জুড়ে ধস নেমেছিল। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান উত্তরকাশীর পুলিশ সুপার অর্পণ যদুবংশী। তাঁর তদারকিতেই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল শুরু করে উদ্ধারকাজ। ১৭ দিনের মাথায় উদ্ধারকাজ সফল হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.