মণিরুল ইসলাম, হাওড়া: বাগনানে ভস্মীভূত ১৯টি দোকান। শনিবার ভোররাতে বাগনানের লাইব্রেরি মোড়ের ওই দোকানগুলিতে আগুন ধরে যায়।প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারাই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। পরে দমকলের চারটে ইঞ্জিন ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ১৯টি দোকান।
দোকান মালিকদের দাবি, আগুনে কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কেউ বা কারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বাগনানের এক এএসআই বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। এদিনের ঘটনা দিল্লির আনাজমান্ডির ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের স্মৃতি আরও একবার উসকে দিল।
রাত তখন তিনটে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সকলে। হঠাৎই পোড়া গন্ধ পেয়ে বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসেন বাগনান লাইব্রেরি মোড়ের বাসিন্দারা। বাইরে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ।দাউদাউ করে জ্বলছে ১৯টি দোকান। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তখনই তাঁরা দমকলে খবর দেন। চারটে ইঞ্জিন দু’ঘণ্টার চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে গরীবগুর্বো মানুষের রোজগারের একমাত্র ভরসা।তাঁদের অভিযোগ, কেউ বা কারা চক্রান্ত করে দোকানগুলিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। রাতে ওই এলাকায় কর্তব্যরত এএসআইয়ের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে খবর।
পুড়ে যাওয়া মিষ্টির দোকানের মালিক জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, “রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আগুনের খবর পাই। ছেলে আসে। দেখে, সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।” ফলের দোকানদার শেখ মানিক বলেন, “আমার বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে মিনিট পাঁচেক দূরে চন্দ্রপুরে। খবর পেয়ে এসে দেখি, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। পরে দমকল এসে আগুন নেভায়।” স্বপন মণ্ডল, ব্রজলাল চক্রবর্তী, মোস্তাক আলি-সহ অন্য ব্যবসায়ীদের কথায়, “আমরা সবাই এখানে দাদা-ভাইয়ের মতন থাকি। যে বা যারা আমাদের এই ক্ষতি করল, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কড়া শাস্তি দিক প্রশাসন।”
ঘটনা প্রসঙ্গে বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন জানান, “এলাকায় সমস্ত ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে থাকেন। কিছুদিন ধরে কয়েকজন বহিরাগত এই এলাকায় আসর জমিয়েছিল। তারা এই কাজ করেছে কি না, পুলিশকে তা খতিয়ে দেখতে বলেছি।” দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিধায়ক আরও জানান, “দোকান মালিকদের পাশে আছি। তাঁদের জন্য কী করা যায়, তা দেখছি।” এদিকে এলাকায় সিসিটিভি ও হাই মাস্টের দাবিতে সরব হয়েছেন দোকান মালিকরা। সেই দাবি মেনে বাগনান দু’নম্বর পঞ্চায়েতের তরফে শনিবারই সিসিটিভি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে দোকান মালিকদের ত্রিপল বিলি করেছেন বাগনানের এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.