Advertisement
Advertisement
Medinipur

বন্যায় জলের তলায় ফুল ও সবজি, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৮০ কোটি টাকার ফসল নষ্ট

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে মোট ১৭ হাজার হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত।

180 crores worth of crop lost in East Medinipur

প্রতীকী ছবি।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:October 3, 2024 2:54 pm
  • Updated:October 3, 2024 8:49 pm  

নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: পুজোর মুখে ফুল চাষ থেকে শুরু করে অতিরিক্ত বৃষ্টি কিংবা বন্যার জলের তলিয়ে গিয়েছে পান, ধান, সবজি চাষ। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ১৮০ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠালো জেলা কৃষি ও হর্টিকালচার দপ্তর।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে মোট ১৭ হাজার হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত। তার মধ্যে ১১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতেই আমন চাষ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি। এছাড়াও প্রায় ১৩৬৪ হেক্টর জমির সবজি চাষ, ৫৪০ হেক্টর ফুলচাষ ও ৬৭ হেক্টর পান চাষের জমি জলের তলায় পচে নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করেছেন জেলা হর্টিকালচার দপ্তরের আধিকারিকরা। যেখানে মোট ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যাটাও প্রায় ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। শুধুমাত্র পাঁশকুড়া ব্লকেই প্রায় ২৫ হাজার চাষি ক্ষতিগ্রস্ত বলে দাবি কৃষি দপ্তরের। ফলে প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী কৃষি দপ্তর মোট ৩৯৩টি মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করে জেলাশাসকের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে ফুল, পান ও সবজি চাষেও প্রায় ১২২ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করে রিপোর্ট পাঠিয়েছে জেলা হটিকালচার দপ্তর।

Advertisement

যার মধ্যে শুধুমাত্র পান চাষেই প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার ফসল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি। আর প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে এই পান চাষে যথেষ্টই প্রভাব পড়েছে কাথির রামনগর ১, এগরা ১-সহ পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের ব্লকগুলির উপর। ফুল চাষের ক্ষেত্রে তো আবার পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট এলাকাতেই প্রায় সাড়ে ৫০০ হেক্টর কৃষি জমিতে ২১ কোটি টাকার ফুল চাষ নষ্ট হয়েছে। একইভাবে সবজি চাষের ক্ষেত্র হিসেবে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট পটাশপুর ও রামনগর এলাকাতে সবজি চাষে ব্যাপকভাবেই প্রভাব পড়েছে। ফলে আসন্ন পুজো মরসুমের দিনগুলিতে ফুল ও সবজি যথেষ্টই মহার্ঘ হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য। তবে চাষিদের দুর্দশা ঘোচাতে কৃষি ও হর্টিকালচার দপ্তরের এই প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ফসল বিমা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।

পাঁশকুড়া ব্লকের গোবিন্দনগর, ঘোষপুর, রঘুনাথবাড়ি, চৈতন্যপুর-১ ও ২, প্রতাপপুর-১ ও ২ সহ ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভয়াবহ এই বন্যায় গোবিন্দনগরের সবকটি মৌজাও প্লাবিত হয়ে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ওই ব্লকে মোট ২৫হাজার চাষি ক্ষতিগ্রস্ত বলে কৃষি দপ্তর প্রশাসনকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। পাঁশকুড়া ব্লকের মাইসোরা, কেশাপাট, ঘোষপুর, পাঁশকুড়া-১গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফুলচাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে পাঁশকুড়া পুরসভা এলাকাতেও ফুলচাষ ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে বন্যার জল আরো নামলে আগামী সময়ে সবমিলিয়ে কৃষি ক্ষেত্রে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৮০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের। স্বাভাবিক কারণেই কাসাইয়ের বাঁধ মেরামতির পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে সার্বিক এই ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চলছে প্রশাসনের অন্দরে চলছে দফায় দফায় পর্যালোচনা বৈঠক।

জেলা কৃষি অধিকর্তা তীর্থঙ্কর মণ্ডল জানিয়েছেন, সম্প্রতি বন্যায় কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির একটি খতিয়ান প্রাথমিক রিপোর্ট হিসেবে জেলায় পাঠানো হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসতে আরও বেশ কিছু সময় লাগবে। অপরদিকে হর্টিকালচার দপ্তরের জেলা আধিকারিক অতনু গুপ্তা জানিয়েছেন, ধান, সবজি, পানের পাশাপাশি পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের ফুলের চাষ প্রায় সম্পূর্ণভাবে নষ্টের পথে। ফলে সার্বিক এই ক্ষয় খতিয়ানের একটি প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী পর্যালোচনা চলছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে আলোচনার ভিত্তিতেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement