রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: রাতারাতি বদলে যাবে মন্দারমণি! রাত পোহালেই ধূ ধূ প্রান্তরে পরিণত হবে বাঙালির প্রিয় পর্যটনস্থল। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে মোট ১৪৪টি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস জারি করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। যার ফলে মাথায় হাত পড়েছে মন্দারমণি হোটেল ব্যবসায়ীদের। ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
সমুদ্রপাড় দখল করে মন্দারমণি (Mandarmani) পর্যটনকেন্দ্রে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক হোটেল। অভিযোগ, রীতিমতো প্রাচীর দিয়ে তার উপরেই পর্যটকদের আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা করেছে একাধিক হোটেল। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে শতাধিক ‘বেআইনি’ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের ২ মে জাতীয় পরিবেশ আদালত এই নির্দেশ জারি করেছিল। কারণ, উপকূলবিধি না মেনেই সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেশন জোন) এলাকার মধ্যে হোটেলগুলি গড়ে তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তবে জেলা প্রশাসন দুই বছর সেই নির্দেশ কার্যকর করেনি। ১৪৪টি হোটেলের মধ্যে শুধু দাদনপাত্রবাড়েই রয়েছে ৫০টি হোটেল। সোনামুই এলাকায় রয়েছে ৩৬টি। সিলামপুরে ২৭টি, মন্দারমণিতে ৩০টি এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরে একটি লজ রয়েছে। এই হোটেলগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
পর্যটনের মরশুম শুরুর আগে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ জারি করায় হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। না হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” তবে হাতে আর বেশি সময় নেই। তার মধ্যে হোটেল ভাঙার নির্দেশ কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও জেলা প্রশাসনের কর্তারা এবিষয়ে তেমন কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ডিসেম্বর মাস থেকে মন্দারমণিতে পর্যটকের ভিড় বাড়তে থাকে। এবারও হোটেল বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই নভেম্বরেই হোটেল ভাঙার নির্দেশ জারি হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছে হোটেল মালিকদের কপালে। মন্দারমণি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর মমরেজ আলি বলেন, “১৪৪টি হোটেল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। একসঙ্গে এতগুলি হোটেল ভেঙে দেওয়া হলে কয়েক হাজার মানুষের রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিষয়টি দেখার জন্যে। এবিষয়ে আমরা কলকাতা হাই কোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছি। দুই-এক দিনের মধ্যে শুনানি রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.