শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে ভারতে প্রবেশ। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না। অভিযান চালিয়ে ওপার বাংলা থেকে পলাতক ১৪ জন রোহিঙ্গাকে (Rohingya) গ্রেপ্তার করল আরপিএফ এবং রেল পুলিশ। ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত অবৈধভাবে পেরিয়ে কীভাবে তারা ভারতে প্রবেশ করল, তা নিয়ে চিন্তায় পুলিশ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে আটজন মহিলা, চারজন পুরুষ এবং দুই নাবালক-নাবালিকা রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, “ধৃতরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে পলাতক। ট্রেনের টিকিটও বেআইনি। অন্য যাত্রীদের ভুয়ো নাম-পরিচয় দিয়ে তারা টিকিট কেটেছিল। এই ঘটনার পর ট্রেনগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”
আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আগরতলা-নিউ দিল্লি বিশেষ রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে ওই রোহিঙ্গারা গা ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। বদরপুর থেকে অন্য যাত্রীদের নাম ও পরিচয় নকল করে টিকিট কাটে তারা। এরপর অসমের বদরপুর থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে চড়ে বসে। কিন্তু আলিপুরদুয়ারে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে তাদের বি-১০ কামরায় ঝামেলা বেঁধে যায়। এরপর কামরায় থাকা বাকি যাত্রীরা তাঁদের বিরুদ্ধে রেলের হেল্পলাইনে ফোন করে অশোভন আচরণের অভিযোগ জানায়।
কিন্তু ট্রেনটি আলিপুরদুয়ার স্টেশন পার করে গেলে আলিপুরদুয়ার স্টেশনের রেলের আধিকারিকরা কাটিহার ডিভিশনের আরপিএফ এবং রেল পুলিশের আধিকারিকদের গোচরে আনা হয় বিষয়টি। অভিযোগ পেয়ে নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনে রাজধানী এক্সপ্রেস ঢুকলে এনজেপি স্টেশন শাখা এবং রেল পুলিশ একত্রে অভিযান চালায়। বেআইনি টিকিট-সহ ১৪ জনকে আটক করা হয়। আটক করার পর ধৃতরা ভারতীয় নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এরপরই টানা জেরা করা হয় তাদের। জানা যায়, তারা বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়েছিল। এরপর অবৈধভাবে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে টাকা দিয়ে অসম থেকে ট্রেনের টিকিট কাটে। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই ধরা পড়ে গেল সকলে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.