ব্রতদীপ ভট্টাচার্য ও জ্যোতি চক্রবর্তী: বিপদের আঁচ করেছিল রাজ্য সরকার। আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতেই একে একে করোনা পজিটিভ হচ্ছেন তাঁরা। বাড়ি ফিরে আসার পর করোনা ধরা পড়ল চার পরিযায়ী শ্রমিকের। আর তার জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। চার জনকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেছে প্রশাসন। তাঁদের পরিবারের লোকেদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েতের দক্ষিণ চৌরাশি এবং সোহাই শ্বেতপুরের চার পরিযায়ী শ্রমিক অন্যান্যদের সঙ্গে মহারাষ্ট্রে সেলাইয়ের কাজ করতেন। ২১ মে তারা ফিরেছিলেন। বারাসত স্টেডিয়ামে তাঁদের স্ক্রিনিং হয়। স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে তাঁদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ২২ মে দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সোমবার চার পরিযায়ী শ্রমিকের সোয়াব পরিক্ষার রিপোর্টে পজিটিভ আসে। এতদিন বারাসত, মধ্যমগ্রাম, হাবড়া, অশোকনগর বনগাঁ থেকে করোনা আক্রান্তের হদিশ আসছিল। চতুর্থ দফার লকডাউন পর্যন্ত নিশ্চিন্ত ছিলেন দেগঙ্গার বাসিন্দারা। তবে এবার আতঙ্ক গ্রাস করল তাঁদের। চৌরাশি এবং সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা চারজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভিনরাজ্য থেকে ফেরার পর হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা ছিল ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের। কিন্তু তাঁরা এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন। যার ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন তারা। দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন এখনও পর্যন্ত ২৫০ জন পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬৬ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার চার জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে।
এদিকে, এক দিনে সাত জন পরিযায়ী শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলেন বনগাঁ মহকুমা থেকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ,আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জনার বাড়ি গাইঘাটাও এক জন আক্রান্ত বাগদায়। ১৮ তারিখ বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে তাদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার তাদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ৭ জনকে রাজারহাটের করোনা হাসাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্তদের এলাকাগুলিকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্তরা পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ি বাগদা থানার হেলেঞ্চা ও গাইঘাটা থানার রামচন্দ্রপুর, সুটিয়া, বকচারা-সহ একাধিক এলাকায়। রাজ্যে ফেরার পর স্বাস্থ্য দপ্তরের পরামর্শে তাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ বলেন, “আক্রান্তরা মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করত। সরকারি ব্যবস্থাপনায় সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ফিরেছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.