Advertisement
Advertisement

Breaking News

Dainhat Municipality Chairman

তৃণমূলের পুর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব দলীয় কাউন্সিলরদের! অচলাবস্থা দাঁইহাটে

বিরোধীশূন্য দাঁইহাট পুরবোর্ড।

11 Councilors offers motion of no confidence against Dainhat Municipality Chairman
Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 18, 2025 8:53 pm
  • Updated:March 18, 2025 8:53 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: সম্প্রতি সাংগঠনিক বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর সপ্তাহদুয়েক আগেও দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে দলীয় কাউন্সিলরদের সতর্ক করে মিলেমিশে পুরসভা পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব বর্ধমান জেলার দাঁইহাট পুরসভার অচলাবস্থার পরিবর্তন হয়নি। এবার দলের অভ্যন্তরীণ কাজিয়া চরম পর্যায়ে। শেষ অবধি তৃণমূল পরিচালিত দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন দলের ১১ জন কাউন্সিলর।

এদিন দাঁইহাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অজিত বন্দোপাধ্যায়-সহ ১১ জন কাউন্সিলর পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসারের হাতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। উল্লেখ্য, দাঁইহাট পুরসভার মোট ১৪ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। তার মধ্যে ১১ জনেই প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে প্রদীপ রায় বলেন, “আমি যদিও অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি দেখিনি। তবে শুনলাম আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কাউন্সিলরদের একাংশের জন্য পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিল। ওঁদের সহযোগিতা পাইনি। আমাকেও পুরসভা চালাতে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছিল । দল যা বলবে সেই নির্দেশ পালন করব।”

Advertisement

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দাঁইহাট পুরসভার নির্বাচন হয়। ১৪ ওয়ার্ডের মধ্যে সবকটিতেই জয়ী হয়েছিলেন শাসকদলের প্রার্থীরা। এখনও বিরোধীশূন্য দাঁইহাট পুরবোর্ড। তখন চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন শিশির মণ্ডল। কয়েক মাসের মধ্যেই শিশির মণ্ডলের সঙ্গে এক তরুণীর আপত্তিকর কথোপকথনের অডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে শিশির মণ্ডল চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন প্রদীপ রায়।

কিন্তু তার কিছুদিন পর থেকেই প্রদীপ রায়ের সঙ্গে অন্যান্য কাউন্সিলরদের সংঘাত শুরু হয়েছিল। পুরবোর্ডের মিটিং বয়কট করে চলেছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান অজিত বন্দোপাধ্যায় সহ ১১ কাউন্সিলর। তারপর জেলা নেতৃত্ব বৈঠক ডেকে দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করলেও ওই বৈঠকে গরহাজির ছিলেন বিক্ষুব্ধ ১১ জন। তাঁরা প্রদীপবাবুকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানোর দাবিতে অনড় ছিলেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে চলছিল দাঁইহাট পুরসভা। তারই মধ্যে এদিন মঙ্গলবার ভাইস চেয়ারম্যান অজিত বন্দোপাধ্যায়-সহ ১১ জন কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার শাশ্বত বসু চৌধুরীর হাতে। যদিও এক্সিকিউটিভ অফিসার বলেন,”আমি কোনও মন্তব্য করব না।”

অজিত বন্দোপাধ্যায়ের দাবি,”প্রদীপ রায় আমাদের কোনও গুরুত্ব দিতেন না। আমাদের সঙ্গে চলার সদিচ্ছা কোনওদিন দেখাননি। সম্প্রতি ৫ মার্চ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস চেয়ারম্যান-সহ আমাদের সকল কাউন্সিলরদের ডেকে বৈঠকে বসেছিলেন। তিনি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডল এই তিনজনকে নিয়ে কমিটি গঠন করে পুরসভা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরেও দেখি চেয়ারম্যান সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে নিজের মতনই চলছেন। তাই আমরা অনাস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

অজিতবাবুর অভিযোগ,”চেয়ারম্যানের এই ধরনের আচরণের কারণে আমাদের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই উন্নয়মূলক কাজ হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষ বিরূপ হচ্ছেন। এরকম চলতে থাকলে দলেরই ক্ষতি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দলের ফল খারাপ হবে।” যদিও চেয়ারম্যান প্রদীপ রায়ের দাবি,” উন্নয়নের কাজ হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সবৈব মিথ্যা। তথ্য পরিসংখ্যান বলবে কোথায় কি কাজ হয়েছে। তবে পূর্বতন বোর্ডের কাজে বেশকিছু অনিয়ম ধরা পড়েছিল। আমি দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে তার রিপোর্ট পাঠিয়েছিলাম।”

পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দাঁইহাট পুরসভার সমস্যা দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব দেখছিলেন। দলের নির্দেশ ছিল দলীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যাবে না। এখন শুনছি দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। আমার কোনও মতামত নেই।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement