অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
সুনীপা চক্রবর্তী , ঝাড়গ্রাম: মাসকয়েক আগে ক্লাস টু তে উঠেছিল পিতৃহীন ইসলাম। এবার করোনা ছিনিয়ে নিয়ে গেল মাকেও। আপাতত অন্ধকার ভবিষ্যতের সামনে অসহায় দশ বছরের বালক। কে তার ভার বইবে? পড়াশোনার খাতা-বই কে কিনে দেবে? কে-ই বা ফি মাসের চিকিৎসার খরচ জোগাবে? স্নায়ুর অসুখের জন্য যে প্রতি মাসে ওষুধ খেতে হয় একরত্তিকে!
ঝাড়গ্রাম শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুননুনগেড়িয়ার ইসলামের জন্মের মাত্র আড়াই বছর পরেই কপালে লেগে গিয়েছিল পিতৃহীন তকমা। মা আনোয়ারার বিয়ে হয়েছিল দিল্লির (Delhi) বাসিন্দা মহম্মদ খানের সঙ্গে। পেশায় দর্জির কাজ করতেন মহম্মদ। কিছুদিন সেখানে থাকার পর আনোয়ারা ঝাড়গ্রামে বাবার কাছে চলে আসেন। স্বামী আসতেন মাঝে মাঝে। ছেলে হয়। ছেলের বয়স তখন বছর আড়াই, মহম্মদ খান মারা যান। সেই ইস্তক ছেলেকে নিয়ে বাবা, ভাই-বোনদের সঙ্গে ঝাড়গ্রামই ছিল আনোয়ারার স্থায়ী ঠিকানা। অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন, ছেলেকে ভরতি করেছিলেন প্রাইমারি স্কুলে। টেনেটুনে তাও মোটামুটি চলছিল সংসারের গাড়ি। করোনা তাকে বেলাইন করে দিল।
কেমন দেখতে ছিল বাবাকে? মুখটাই তো মনে নেই ইসলামের। মাকে ঘিরেই ছিল তার পুরোটা। মা ও বুঝতে দিতেন না বাবার অভাব। বলতেন, “আমিই মা, আমিই তোর বাবা।” করোনা (Coronavirus) আক্রান্তদের পলিথিন মোড়া শরীর টিভিতে দেখে বিস্ময়ে চেয়ে থাকত ইসলাম। ছেলের চোখ ঢেকে টিভির চ্যানেল ঘুরিয়ে দিতেন মা।
কাচঘেরা এক গাড়ি যখন মাকে নিয়ে গোরস্তানের পথে, বোধবুদ্ধি হারিয়ে নির্বাক তাকিয়ে দেখেছে দশ বছরের অনাথ। ইসলাম আপাতত মামা ও মাসির কাছে। কী ভাবে ওকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করে তুলবেন, ওঁরাও জানেন না। মামা মুস্তাকের কথায়, “পয়লা শ্রাবণ দিদি মারা গেল। জ্বর কমছিল না। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের করোনা পরীক্ষা করিয়ে দেখা যায় পজিটিভ। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল।”
কিন্তু জখম ফুসফুস রেহাই দেয়নি। মুস্তাক রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। করোনা আবহে কাজ মিলছে না, তাই ঘরেই বসে। “মা-বাবা মরা ভাগ্নেটাকে দেখলে চোখে জল আসে। আমারই বা কী রোজগার! কেউ যদি একটু সাহায্য করত…।” আক্ষেপ মামার।
পাশে চাই আপনাকেও
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃ দ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.