ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে গোপনে চলছে জঙ্গি শিবির। এপার থেকে অন্তত দশজন তরুণ শিবিরগুলিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসেছে। সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। কী কারণে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। এই তথ্যগুলি গোয়েন্দারা যাচাই করে দেখছেন। তথ্যগুলিকে গুরুত্বও দিচ্ছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাজ্যের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কয়েকটি জায়গায় ফের কার্যকলাপ শুরু করেছে জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। যদিও সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের দু’টি জায়গায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা ও সদস্যরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের চাপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহি জেলায় ফের নতুন করে গোপনে প্রশিক্ষণ শিবির শুরু করেছে জেএমবি। এই জঙ্গি সংগঠন এরকম অন্তত পাঁচটি শিবিরের আয়োজন করে বলে খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জানান, মুর্শিদাবাদের অন্যপারে রাজশাহিতে বারবার ডেরা বেঁধেছে জঙ্গিরা। আর মালদহের অন্যদিকে বাংলাদেশের চাপাইনবাবগঞ্জে রীতিমতো জাল নোটের আখড়া। এখান থেকে মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে পাচার হয় লাখ লাখ টাকার জাল নোট। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (STF) ও বিএসএফ গোয়েন্দাদের হাতেও প্রচুর জাল নোট ধরা পড়েছে। এবার এই দু’টি জেলায় ডেরা বেঁধে প্রশিক্ষণ শিবিরও তৈরি করল জেএমবি। এই তথ্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের কাছেও পাঠানো হয়েছে। তাঁরাও ওই ডেরাগুলির সন্ধান চালাচ্ছেন।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, যেহেতু জেএমবির ধুলিয়ান মডিউল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ভেঙে ফেলেছে, তাই মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমে আর নতুন মডিউল না তৈরি করে ওই জেলা থেকে জেএমবির কয়েকজন নেতা তরুণদের নিয়োগ করতে শুরু করে। এই নিয়োগের পিছনে এসটিএফের হাতে ধৃত জঙ্গি নেতা ইজাজ বা কাশেম, এমনকী, জেএমবির আন্তর্জাতিক নেতা সালাউদ্দিন সালেহিন, মিন্টু খান বা বড় আব্দুল করিম থাকাও আশ্চর্যের নয়।
একদিকে যখন জেএমবির ইটাহার মডিউল তৈরির কাজ চলেছে, তখনই মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম থেকে তরুণদের নিয়োগ করে গোপনে বাংলাদেশের সীমান্ত পার করে তাদের পাঠানো হয়েছে চাপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহির ঘাঁটিতে। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, তাত্ত্বিক বিষয়গুলির সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিস্ফোরক, হ্যান্ড গ্রেনেড বা অ্যাসিড বোমা তৈরির বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ওই শিবিরে সালাউদ্দিনের মতো নেতার উপস্থিতিও গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কিন্তু সাধারণতন্ত্র দিবসের আগেই প্রশিক্ষণ শেষ করে চোরাপথে সীমান্ত পার করিয়ে দশজনকে কেন এই রাজ্যে পাঠানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগেও দেখা গিয়েছে যে, মুর্শিদাবাদের যুবকদের চেন্নাইয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দিয়ে বুদ্ধগয়ায় নাশকতা ঘটানো হয়েছিল। ফের জেএমবি এই রাজ্য বা তার আশপাশের কোথাও কোনও নাশকতার ছক কষছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দশজনকেই শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। তাদের কার্যকলাপের উপরও নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.