তখনও ঝালদার জঙ্গলে আটকে পরিযায়ী শ্রমিকরা
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: খাবার না পেয়ে প্রায় আশি কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে রাঁচি থেকে পুরুলিয়ায় আসছিলেন বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের ১০ জন পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু, আন্তঃরাজ্য সীমানা সিল থাকায় তাঁরা ঝালদা থানার তুলিন ঢোকার মুখে বাধা পান। তখন জঙ্গল দিয়ে এই জেলায় ঢোকার চেষ্টা করলে সেখানেও স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা ফের ঝাড়খণ্ডে ঢুকতে গেলে ওখানকার মানুষজন তেড়ে আসেন।
ফলে বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত প্রায় সাত ঘণ্টা বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দাদের সাঁড়াশি আক্রমণে তীব্র দাবদাহে খিদে পেটে সুবর্ণরেখা নদীর তিরে তুলিন এলাকার জঙ্গলেই কাটাতে হয়। পরে অবশ্য পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের ওই রাজ্যেই ফেরত পাঠায়।
এপ্রসঙ্গে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই শ্রমিকদের সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ওরা জেলায় ঢোকেনি। ঝাড়খণ্ডের সীমানায় ছিল।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দশ পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে চারজন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা, তিনজন পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার। আর বাকি তিনজনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার চন্দনকেয়ারীতে। তাঁরা একাধিক ঠিকাদার সংস্থার অধীনে কাজ করেন। লকডাউন (Lock down) বেড়ে যাওয়ায় ওই ঠিকাদার সংস্থা তাঁদের আর খাবার দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এদিকে হাতেও পয়সা না থাকায় তাঁরা বুধবার দুপুরে বাড়ির পথই ধরেন। রাতভর বাক্স–প্যাটরা নিয়ে হেঁটে ভোরের দিকে সীমানা পার হতে গেলেই বাধার মুখে পড়েন।
মুর্শিদাবাদের শেখ আব্বাস ও চন্দনকেয়ারীর বিকাশ কুমার বলেন, ‘সারা রাত হাঁটার পর যে এমন বাধার মুখে পড়ব তা ভাবিনি। দুই রাজ্যের সাঁড়াশি আক্রমণে জঙ্গলেই আটকে গিয়েছিলাম। প্রায় সাত ঘণ্টা খিদে পেটে তুলিন এলাকার জঙ্গলেই বসে থাকতে হয়। আশি কিলোমিটার হেঁটেও বাড়ি আর যেতে পারলাম না।’
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.