রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: প্রবল অর্থ ও খাদ্য সংকটের জেরে বাধ্য হয়েই পায়ে হেঁটে ১০০০ কিমি পেরিয়ে নাগপুর থেকে নদিয়ার বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ১০ পরিযায়ী শ্রমিক। পরিকল্পনা মাফিক কয়েকটি বিস্কুটের প্যাকেট সঙ্গে নিয়ে শুরু করেছিলেন যাত্রাও। তবে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে পৌঁছতেই মিলল সুরাহা। বিষয়টি জানার পরই ওই শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য বাসের ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার।
জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই নাগপুরের জয়ন্তীনগরে একটি বিল্ডিং মেরামতের কাজ করছিলেন নদিয়ার বেশ কয়েকজন শ্রমিক। কিন্তু আচমকা লক়ডাউনে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। প্রথম কয়েকদিন স্বাভাবিক ছন্দে চললেও কিছুটা সময় পের হতেই প্রবল অর্থ সংকট দেখা দেয়। ফুরোয় খাবার। একইভাবে উপার্জনকারীরা ভিনরাজ্যে আটকে পড়ায় সমস্যায় পড়েন পরিবারের সদস্যরাও। এভাবে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরে স্থানীয় পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করেন ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা। আবেদন করেন তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করার। একাধিকবার বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হলেও পঞ্চায়েতের তরফে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এরপরই এক প্রকার বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গত বুধবার সকালে কয়েকটি বিস্কুটের প্যাকেট সম্বল করে কর্মস্থল থেকে নদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তাঁরা।
পায়ে হেঁটেই রবিবার বিকেলে নাগপুর থেকে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের কাছে পৌঁছন ওই দশ শ্রমিক। এক শ্রমিকের কথায়, হাঁটার পাশপাশি কখনও ট্রাকে কিছুটা পথ এসেছেন তাঁরা। পেট ভরিয়েছেন সঙ্গে থাকা বিস্কুট আর রাস্তার পাশের টিউবওয়েলের জলে। এই পরিস্থিতিতে কোনওরকমে সীমান্তের রাধাবল্লভপুরে পৌঁছনোর পরই স্বস্তি। প্রশাসনের কাছে খবর পৌঁছতেই জানানো হয় যে, অবিলম্বে বাসে করে ঘরে ফেরানো হবে তাঁদের। এ বিষয়ে নদিয়া জেলা শ্রম দপ্তরের ডেপুটি লেবার কমিশনার শ্যামল দত্ত বলেন, ওড়িশা সীমান্তে আটকে পড়া শ্রমিকদের কথা জেনে রাজ্য সরকার তাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.