ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: গ্রাহকের আধার কার্ড রয়েছে। বায়োমেট্রিকও করা আছে। কিন্তু রেশন নিতে গিয়ে কিছুতেই আঙুলের ছাপ মিলছে না। রাজ্যে এমন গ্রাহকের সংখ্যা গত এক বছরে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৮ লক্ষ ২৯ হাজার ১৮২। খাদ্যদপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদেরই একাংশের আধিকারিকদের ঔদাসীন্যে ঠিক এই সংখ্যক গ্রাহকের রেশন কার্ড ‘সাসপেন্ড’ হয়ে গিয়েছে। কেউই রেশন তুলতে পারছেন না।
সম্প্রতি খাদ্য দপ্তর থেকেই জানা যায়, আঙুলের ছাপ নেওয়ার যে প্রক্রিয়া তা বদলে আঙুলের ছবি তোলার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। গ্রাহকের সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য পেতেই নতুন এই পদ্ধতি চালু করছে আধার কর্তৃপক্ষ। সেই নির্দেশ সমস্ত রাজ্যের খাদ্য দপ্তরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তৎপরতায় সেই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। তার মধ্যেই খবর, ১ কোটি ৫৮ লক্ষ ২৯ হাজার ১৮২ গ্রাহকের আঙুলের ছাপ না মেলায় তাঁদের কার্ড নিজে থেকেই সাসপেন্ড হয়ে গিয়েছে। যার জেরে তাঁরা রেশনও পাচ্ছেন না। ডিলারদের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ওই গ্রাহকদের আধার কার্ড রয়েছে। তাঁরা আধার কার্ড নম্বর দিয়ে রেশন কার্ডের সঙ্গে তার সংযুক্তিকরণ, অর্থাৎ বায়োমেট্রিক করিয়েছেন। তাঁদের রেশন কার্ড বৈধ। অথচ, এর পর রেশন নিতে এসে আর তাঁদের আঙুলের ছাপ মিলছে না। গোটা পরিস্থিতিতে সমূহ বিপত্তির মুখে পড়েছেন গ্রাহকরা।
এ নিয়ে খাদ্য দপ্তরকে রিপোর্ট দিয়েছেন ডিলাররা। একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন। দপ্তরের এক আধিকারিক যদিও জানাচ্ছেন, যে প্রক্রিয়ায় আঙুলের ছবি নেওয়ার কাজ হবে তা অত্যন্ত সহজ। আর তাতে গ্রাহকের সম্পর্কে স্বচ্ছতাও থাকবে। কিন্তু তার জন্য সিস্টেম আপডেট করতেই কিছু সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে দপ্তরকে। কী ধরনের সমস্যা? ওই আধিকারকের কথায়, “একটা পুরনো সিস্টেমে নতুন সিস্টেম আপডেট হচ্ছে। পুরোটাই প্রযুক্তিগত কাজ। তাতে চাপ বাড়ছে। প্রথম দিকে তার জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল।” তবে আগের মতো নতুন করে কোনও সমস্যা নেই বলে দাবি দপ্তরের।
সে কথা যদিও মানতে নারাজ ডিলাররা। তাঁদের কথায়, গ্রাহকরা সমস্যার মুখে পড়ছেন আমাদের সামনে। সেই সমস্যা আমরা দপ্তরকে জানিয়েছি। এখনও দেখতে পাচ্ছি সমস্যা চলছে। কীভাবে দপ্তর বলতে পারে সমস্যা নেই! তাঁদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও দপ্তরের কিছু আধিকারিকের উদাসীনতায় এই সিস্টেম ধাক্কা খাচ্ছে। আর তার প্রভাব গিয়ে পড়ছে সরাসরি গ্রাহকের উপর। তাঁরা রেশন পাচ্ছেন না। তাঁদের আঙুলের ছাপ মিলছে না। অথচ তাঁদের আধার কার্ড আছে। বায়োমেট্রিক করা রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.