হাসপাতালে ভর্তি ওই কিশোরী। নিজস্ব চিত্র
কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: রড পেট দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। রক্তপাতের বহর দেখে সবাই ধরে নিয়েছিলেন সব শেষ। কিন্তু অসাধ্যসাধন করলেন চিকিৎসকরা। একঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে কিশোরীর শরীরে গেঁথে থাকা রড বের করে বিপন্মুক্ত করলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এখন সুস্থ আছে ১০ বছরের নাবালিকা কৌসুম খাতুন। সরকারি হাসপাতালের এই সফল অস্ত্রোপচারের ঘটনা সাড়া ফেলেছে গোটা এলাকায়।
গত বুধবার নদিয়ার কালীগঞ্জের পাড়ার ছেলে মেয়েদের সঙ্গে খেলা করছিল কৌসুম খাতুন। হঠাৎ একটি নির্মিয়মান বাড়ির একতলা থেকে নীচে পড়ে যায় ওই বালিকা। সেই সময় একটি রড তার পেটে ঢুকে যায় এবং পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ওই অবস্থায় তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যান। এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে অপারেশনের পর ওই রড বালিকার শরীর থেকে বার করা হয়। এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সার্জেন ডাঃ নবারুণ মণ্ডল বলেন, প্রায় আড়াই ফুট রড ঢুকেছিল ওই বালিকার শরীরে। তার পেটের নীচে রড ঢুকে পিঠের পাঁজরের পাস দিয়ে বেরিয়েছিল। আর একটু নিচে হলেই কিডনিতে আঘাত লাগত। তবে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কোনও অঙ্গ ছিড়ে যায়নি এটাই ভাগ্যের। সবচেয়ে বড় কথা অপারেশনের সময় রক্তের প্রয়োজন হয়নি। এখন অনেকটাই সুস্থ কৌসুম।
নাবালিকার বাবা জিকাই হালসানা বলেন, মেয়ের ওইরকম পরিস্থিতি দেখে তিনি-সহ পরিবারের সকলেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার সাধ্য ছিল না। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর মেয়েকে বাঁচিয়ে নজির সৃষ্টি করলেন। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডাঃ অনাদি রায়চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে এর আগেও অস্ত্রোপচার করে শরীর থেকে রড বের করা হয়েছে। তবে ওই নাবালিকার শরীরে যেভাবে রড ঢুকেছিল এবং চিকিৎসকেরা যে ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন করলেন সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.