ছবি প্রতীকী
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অপ্রত্যাশিত ঘটনার যেন বিরাম নেই। তেমনই এক নিন্দনীয় ঘটনার সাক্ষী রইল বীরভূমের মহম্মদ বাজার। প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে ডেকে বন্ধুদের নিয়ে নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। যা ঘিরে চাঞ্চল্য স্থানীয় আদিবাসী সমাজে। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের তিনদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম লেদেম সোরেন, রাজা মাড্ডি, নাথাইল হেমব্রম, লক্ষ্মীরাম হেমব্রম ও এক নাবালক আছে। তারা সকলেই যেঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় পাথরের লরিতে খালাসির কাজ করে। জানা গিয়েছে, লেদেম সোরনের সঙ্গে ১৪ বছরের ওই নাবালিকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই ছিল। গত মঙ্গলবার ওই নাবালিকার বাবা-মা বাড়িতে থাকবে না বলে জানতে পারে লেদেম। সন্ধেবেলা নাবালিকাকে ফোন করে লেদেম তাকে ডাকে। প্রথমে ডাকে সাড়া দেয়নি ওই আদিবাসী কিশোরী। পরে দুই ভাইকে ঘুম পাড়িয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ লেদেমের বাইকে চড়ে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একটি বাগানবাড়িতে পৌঁছায় তারা।
সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল লেদেমের চার বন্ধু। নাবালিকাকে সেখানেই গণধর্ষণের পর নাথাইল নামের যুবক বাইকে উঠিয়ে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে আসে। বাড়িতে ঢুকে অসুস্থ হয়ে পরে নাবালিকা। ফোনে বাবাকে জানায়। এমনকী আতঙ্কে কিশোরী আর কথা বলতে পারেনি। পরেরদিন তাকে রামপুরহাটের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়। সেখান থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পর ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে নাবালিকা। তার শরীরে সংক্রমণ শুরু হয়।
এরপর তার পরিবারের সদস্যরা মহম্মদবাজার থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায়। তদন্তে নেমে রাতেই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে একজন নাবালক। শনিবার তাদের সিউড়ির বিশেষ পকসো আদালতে তোলা হলে বিচারক ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে আদিবাসী উন্নয়ন গাঁওতার সম্পাদক রবীন সোরেন বলেন, ”এই ঘটনায় আমার বুকে ধাক্কা লেগেছে। আমি ভাবতে পারছি না, আমাদের যুবসমাজের উপর এমন কুপ্রভাব কীভাবে পড়ছে। আমি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তাদের ফের বোঝানোর চেষ্টা করব।” এসপি শ্যাম সিং বলেন, ”আমরা অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে নাবালিকার উপর অত্যাচারের ধারা যুক্ত করেছি। তাদের জেলবন্দি অবস্থাতেই চার্জশিট দিয়ে উপযুক্ত সাজা দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.