জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: স্কুলের ছাত্রদের চুলে বাহারি ছাঁট দেখে বেজায় চটেছিলেন প্রধান শিক্ষক। এক ছাত্রের রংবেরঙের বাহারি চুল প্রভাব ফেলবে অন্য ছাত্রদের উপরেও। এমন অভিযোগে নিজের ঘরে ডেকে এনে কাঁচি দিয়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের সাধের চুল সটান কেটে দিলেন শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে গাইঘাটা সম্মিলনী হাই স্কুলে। প্রধান শিক্ষক কালীরঞ্জন রায় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন অন্যান্য পড়ুয়ার অভিভাবক। প্রধান শিক্ষকের পদক্ষেপে খুশি স্কুলের কর্মকর্তারা। প্রধান শিক্ষক বলেন, “আগেই বৈঠক ডেকে ছাত্রদের বাহারি চুলের বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের সতর্ক করেছিলাম। তারপর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাউডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা রয়েছে৷ মূলত এলাকার ছাত্রছাত্রীরাই স্কুলে পঠন-পাঠনের জন্য আসে। সম্প্রতি শিক্ষকরা লক্ষ্য করেন, এখন ছাত্ররা বিভিন্ন কায়দায় চুল কেটে স্কুলে আসছে। কারও চুল লাল, কারও বা বাদামি। কারও মাথায় আবার লম্বা চুল আর দুই পাশ ট্রিম করা। এমন সব চুলের বাহারে লেখাপড়া থেকে ফোকাস সরে যাচ্ছে ছাত্রদের। স্কুলের পঠন-পাঠনের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছিল বলে দাবি শিক্ষকদের। কারণ ছাত্রদের বাহারি চুল দেখে অনেকেই তেমনটা করতে চাইছে। তাই চুলে রং করে ও বাহারি ছাঁট দিয়ে স্কুলে আসা যাবে না বলে ছাত্রদের সতর্ক করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। সম্প্রতি তিনি অভিভাবকদের ডেকে মিটিং করেও বিষয়টির দিকে নজর দিতে বলেন। স্কুলের এক শিক্ষকের কথায়, এক শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে লেখাপড়ার থেকে বাহারি স্টাইলে চুল কাটার প্রবণতাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। তাই প্রধান শিক্ষক এমন সিদ্ধান্ত নেন।
সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বৃহস্পতিবার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান চলছিল। ওই অনুষ্ঠানে আসা এক ছাত্রর চুল দেখে বেজায় চটে যান কালীরঞ্জন রায়। তাকে নিজের ঘরে নিয়ে যান৷ সেখানে বসেই কাঁচি দিয়ে চুল কাটেন ছাত্রর। চুল কাটার কথা ছড়িয়ে পড়তেই স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। প্রধান শিক্ষক বলেন, “এভাবে হাল ফ্যাশনের ছাঁট দিয়ে স্কুলে এলে অন্য ছাত্ররাও একই পথে হাঁটবে। আর এক ছাত্রের চুল কাটা হল বলে অন্যরাও সচেতন হবে।”
তবে এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগে কাঁচি অভিযানের সাক্ষী হয়েছে নলহাটির লোহাপুর স্কুলের পড়ুয়ারাও। ছাত্রের বাহারি হেয়ার স্টাইলে কাঁচি চালিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.