প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে মীরজাফরের সঙ্গে তুলনা করলেন প্রধানমন্ত্রী।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পিছনে তদানীন্তন সেনাবাহিনীর উপপ্রধান কর্মকর্তা ও পরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল বলে ফের অভিযোগ আনলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। তিনি বলেন, বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানই ছিল খলনায়ক। রবিবার (২৩ আগস্ট) জাতীয় শোকদিবস পালন উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (Sheikh Mujibur Rahaman) জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন’ জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এ অভিযোগ আনেন।
ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনের এই সভায় শেখ হাসিনা তাঁর অফিস কাম বাসভবন গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পিছনে আসল খলনায়ক ছিল জিয়াউর রহমান। তার সঙ্গে ছিল বেইমান খোন্দকার মোশতাক। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াকে করা হলো সেনাপ্রধান। খুনি মোশতাক হয়ে গেল রাষ্ট্রপতি। এ থেকেই বোঝা যায়, মোশতাক এবং জিয়াই এই হত্যায় জড়িত ছিল।’ মীরজাফর যেমন ইংরেজদের সঙ্গে মিলে বিশ্বাসঘাতকতা করে নবাব সিরাজ উদ-দ্দৌলাকে হত্যা করেছিল, মোশতাকও জিয়ার সঙ্গে মিলে সেই কাজটাই করেছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সিরাজ উদ-দ্দৌলাকে হত্যার পর ইংরেজরা নবাব বানিয়েছিল মীর জাফরকে। কিন্তু সে তিন মাসও নবাব থাকতে পারেনি। মোশতাকেরও সেই পরিণতিই হয়েছিল। সেও তিন মাসের বেশিদিন ক্ষমতায় টিকতে পারেনি। তাকে সরিয়ে দিয়ে একইসঙ্গে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতি হয়ে গেল জিয়া নিজে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান যে জড়িত, সেটা খুনিরাও বলেছে বলে জানান সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, একটি জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছিলেন তাকেই খুনিরা হত্যা করল। পাকিস্তানিরা পারেনি। কিন্তু জাতির পিতার যাদের প্রতি বিশ্বাস ছিল ভালবাসা ছিল তারাই জাতির পিতাকে হত্যা করে বিশ্বাসঘাতকতা করল। শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্টে শুধু হত্যাকাণ্ডই ঘটানো হয়নি। ঘাতকদের উদ্দেশ্য ছিল, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধ্বংস করা। জিয়া বেছে বেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সেনা অফিসারদের খুন করেছে। খালেদা জিয়াও (Begum Khaleda Zia) একই পথ অনুসরণ করেছে। যে আদর্শ এবং লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই আদর্শ এবং লক্ষ্য ধ্বংস করাই ছিল খুনিদের লক্ষ্য। তারা কখনও চায়নি বাংলাদেশের উন্নয়ন হোক। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদ মোশারফ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধে যাদের সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তাদেরকে বেছে বেছে হত্যা করে জিয়াউর রহমান। সেনাবাহিনীর মেধাবী অফিসারদেরও একে একে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রলিগ-যুবলিগ এবং আওয়ামি লিগের (Awami League) কত নেতাকর্মীকে গুম করেছে তার শেষ নেই। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকাবহ যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন আসাদুজ্জামান নূর এমপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.