সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’দিন আগেও মহম্মদ ইউনুস বলেছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে কিংবা আগামী বছরের মার্চে হতে পারে। কিন্তু আজ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুখে শোনা গেল অন্য কথা। ছোট-বড় সংস্কারের দোহাই দিয়ে ফের ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানালেন তিনি! ইউনুসকে বলতে শোনা গেল, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে ভোট ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে, তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশে রয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ইস্যু, নির্বাচন, এরকম একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন। এরপর সাংবাদিক সম্মেলনে গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে ইউনুস বলেন, সংস্কার যদি ছোট হয় তাহলে ভোট ডিসেম্বরে হবে। আর সংস্কার বড় হলে আগামী বছরের জুনে নির্বাচন হবে। ফলে ভোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এহেন ‘ঢিলেমি’ নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আবার ছোট-বড় পরিমাপ হয়? আর এর ভিত্তিতে নাকি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হবে?
গত বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন হয় ওপার বাংলায়। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরেন শেখ হাসিনা। সরকার গড়ে আওয়ামি লিগ। কিন্তু ৭ মাসের মাথাতেই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চিত্র বদলে যায় বাংলাদেশের। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ‘গণ অভ্যুত্থানে’ পতন ঘটে আওয়ামি সরকারের। দেশছাড়া হন হাসিনা। ৮ আগস্ট ইউনুসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু তারপর দেশের পরিস্থিতি অরাজক হয়ে ওঠে। মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি দিকে দিকে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, খুন, ডাকাতি বেড়েই চলেছে। বিপন্ন সংখ্যালঘুরা। তাই গণতন্ত্র রক্ষায় অনেকেই বলছেন নির্বাচনই একমাত্র পথ। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে অভিযোগ উঠছে, গদি ধরে রাখার লোভে নির্বাচনে দেরি করছেন ইউনুস। কারণ এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও রাজনৈতিক দল নেই।
কয়েকদিন আগেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি তুলে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, পরিস্থিতি ঠিক না হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার কাঁধে তুলে নেবে সেনাবাহিনী। এই সেনাশাসনের (মার্শাল ল) কথা শুনে ডিসেম্বরেই নির্বাচনের কথা জানান ইউনুস। কিন্তু তারপর ফের তাঁর গলাতেই শোনা যায় মার্চে ভোটের কথা। এখন ফের সংস্কারের দোহাই দিয়ে ইউনুস বলছেন সামনের বছরের জুনেও ভোট হতে পারে। এদিকে, নির্বাচন কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভোটের ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের ‘টাইমলাইন’ কোনওভাবেই পেরোতে চায় না তারা। ফলে আদৌ ডিসেম্বরে ভোট হয় কি না বাংলাদেশে সেদিকেই নজর সকলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.