সুকুমার সরকার, ঢাকা: নাগরিকত্ব না পেলে দেশে ফিরবেন না। মায়ানমারের প্রতিনিধি দলকে সাফ জানাল রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। ফলে বাংলাদেশে আশ্রিত শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
শরণার্থী সমস্যার সমাধানের আশা জাগিয়ে গতকাল বুধবার বাংলাদেশে (Bangladesh) পৌঁছয় মায়ানমারের প্রতিনিধি দল। নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছয় নাইপিদাওয়ের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি। গতকাল রাতে ২৯টি পরিবারের ৯৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে প্রতিনিধিদলটি। তারমধ্যে রয়েছেন হোসেন জোহার (৬০)। মায়ানমারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সকাল থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন তিনি, তাঁর দুই স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি আরও ১৫ সন্তানকে নোয়াখালির ভাসানচর আশ্রয়শিবিরে রেখে এসেছেন।
হোসেন জোহার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে তিনি দুই স্ত্রী ও ১৭ ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাসানচর আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেন। মায়ানমার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দু’দিন আগে তাঁদের ভাসানচর থেকে টেকনাফে আনা হয়। হোসেন জানান, তাঁরা যে মায়ানমারের বাসান্দা এটা প্রমাণ করতে অনেক তথ্য যাছাই হয়েছে। সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। জানিয়ে এসেছেন, শুধু তথ্য যাছাই করলে হবে না, তাঁদের ফিরিয়ে নিতে হলে মায়ানমারের নাগরিকত্ব দিতে হবে। না হলে রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাবেন না।
উল্লেখ্য, মায়ানমার সেনাবাহিনীর হাত থেকে জীবন বাঁচাতে পাঁচ বছর আগে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তারও আগে এসেছিল চার লক্ষ। এদের ভিড়ে চলে আসে তস্কর রোহিঙ্গারাও। এর মধ্যে দু’লক্ষ শিশু জন্মগ্রহণ করায় এখন রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লক্ষ। দিনেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ১১৫ টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ধর্ষণ মামলা হয়েছে শতাধিক। উখিয়া-টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পেই একাধিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাম্পগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খুনোখুনি, অপহরণ, লুটপাট স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে রূপ নিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.